টমেটোতে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ থাকলেও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা উপকারের বদলে ক্ষতির কারণ হতে পারে। শুধু তাই নয়, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে টমেটো এড়িয়ে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়। বেশি টমেটো খেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। অ্যাসিডিটি ও পেট ফোলার মতো সমস্যা এড়াতে টমেটো সীমিত পরিমাণেই খাওয়া উচিত।
টমেটো অ্যাসিডিক। এতে ম্যালিক অ্যাসিড ও সিট্রিক অ্যাসিড থাকে। অতিরিক্ত টমেটো খেলে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, যার ফলে বুকজ্বালা, গ্যাস ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিডনিতে স্টোনের রোগীরা:
টমেটোতে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেটের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। যাঁদের কিডনিতে স্টোনের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে টমেটোর বীজ পাথরের আকার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই ধরনের রোগীদের টমেটো কম খাওয়া উচিত, অথবা বীজ ছাড়িয়ে খাওয়াই ভাল।
জয়েন্টের ব্যথা:
টমেটোতে ‘সোলানিন’ নামে একটি অ্যালকালয়েড থাকে। মনে করা হয়, এটি শরীরে প্রদাহ বাড়াতে পারে। যাঁদের জয়েন্টে ব্যথা বা ফোলা সমস্যা রয়েছে, তাঁদের টমেটো খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভাল, কারণ এতে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
অ্যালার্জি ও ত্বকের সমস্যা:
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে টমেটো খেলে ত্বকে র্যাশ, চুলকানি বা ফোলাভাবের মতো অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা যায়। আগে কখনও টমেটো থেকে অ্যালার্জির অভিজ্ঞতা থাকলে, এর সেবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
পেট ও হজমের উপর প্রভাব:
অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া গাট হেলথের জন্য ক্ষতিকর। এতে পেট ফোলা হতে পারে। টমেটোতে থাকা লেকটিন হজমের পথে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ডায়েরিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
টমেটো আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এতে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের জন্য উপকারী। তবে যে কোনও ভাল জিনিসের মতোই এর ক্ষেত্রেও মাত্রা বজায় রাখা জরুরি। অতিরিক্ত টমেটো খেলে শরীরের হজম প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে এবং ধীরে ধীরে নানা শারীরিক অস্বস্তি দেখা দিতে পারে, যা অনেক সময় আমরা খাবারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারি না। বিশেষ করে যাঁদের আগে থেকেই কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই প্রভাব আরও স্পষ্ট হতে পারে। তাই নিজের শরীরের সঙ্কেতগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে খাদ্যাভ্যাসে সচেতন হওয়া অত্যন্ত দরকার। প্রতিদিনের ডায়েটে বৈচিত্র্য রাখা, সব খাবার পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা এবং কোনও খাবার খাওয়ার পর অস্বস্তি অনুভব হলে সেটিকে উপেক্ষা না করাই সুস্থ থাকার সবচেয়ে নিরাপদ পথ।
