আজকাল ওয়েবডেস্ক: চিনি, এখন 'সাদা বিষ' নামে পরিচিত। ফ্যাটি লিভার সহ শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে গুরুতর রোগের নেপথ্যের রয়েছে চিনি। তাই তো আজকাল চিনির থেকে মুখ ফিরিয়েছেন অনেকেই। 

চিনি যে শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তা বর্তমানে কম-বেশি সকলেরই জানা। কিন্তু রোজকার জীবনের খাদ্যতালিকায় কোনও না কোনওভাবে চিনি থাকেই। এমনকি বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যালকোহল ও তামাকের মতো চিনিও আসক্তিকর। কারণ, চিনি সরাসরি রক্তে মিশে যায় এবং অতি উচ্চ মাত্রার ফ্রুকটোজ তৈরি করে। চিনি থেকে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত চিনি খেলে লিভার, অগ্ন্যাশয় এবং অন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। সঙ্গে বাড়ে মানসিক সমস্যাও। 

চিনি খাওয়ার দীর্ঘদিনের অভ্যাস অনেকেই ছাড়তে পারেন না। কিন্তু জানলে অবাক হবেন মাত্র ১৪ দিন চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে শরীরে ম্যাজিকের মতো ফল দেখতে পাবেন। ১৪ দিন চিনিমুক্ত থাকলে ধাপে ধাপে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করবেন। ঠিক কী বদল আসবে শরীরে? জেনে নেওয়া যাক-

চিনি ছাড়া দিন যাপনের প্রথম তিনটি দিন সবচেয়ে কঠিন। কারণ প্রথমে আপনার শরীরকে চিনি না খাওয়াতে অভ্যস্ত করাতে হবে। কিন্তু যে কোনও 'নেশাদ্রব্য'র মতো হঠাৎ করে চিনি বন্ধ করলেও শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। প্রথম তিন দিন মাথাব্যথা, পেটব্যথা, ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। মনে রাখবেন, এই সময় চিনির যে ক্ষতিকর উপাদান জমা ছিল, শরীর তা নিষ্কাশন শুরু করে। তাই এই সময়ে সামান্য অস্বস্তি স্বাভাবিক। 

চতুর্থ দিন থেকে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করতে শুরু করবেন। বাড়তে থাকবে মনোযোগ ও শক্তি। ধীরে ধীরে শারীরিক শক্তি ও মনোযোগ ফিরে পাবেন। এরপর ৮ থেকে ১০ দিনের মাথায় চিনিমুক্ত পাচনতন্ত্র দারুণভাবে কাজ করতে শুরু করবে। পেটে ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। 

শেষ ১১ থেকে ১৪তম দিনে একদিকে খিদে কমে যাবে, ফলে বার বার খাওয়ার ইচ্ছে থাকবে না। সঙ্গে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও অনেক কমে যাবে।  রাতে ঘুমও ভাল হবে। এককথায় ১৪ দিন চিনি না খেয়ে থাকলে দীর্ঘমেয়াদি ফল খেয়াল করবেন। হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে, রক্তে শর্করার মাত্রা থাকবে স্থিতিশীল। শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, কিডনির সমস্যা, চোখের সমস্যা দেখা দেয় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।