আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়া শুধুই শারীরিক চাহিদা নয়, এর সঙ্গে মনেরও যোগ রয়েছে। তাই তো পেটে খিদে না থাকলেও খাবার দেখলেই মনটা কেমন খাই খাই করে! যাকে চলতি কথায় বলে ‘চোখের খিদে’। কারওর কোনও বিশেষ স্বাদের প্রতি আকর্ষণ থাকে। আবার অনেকের সবসময়েই খাওয়ার ইচ্ছে নজরে আসে। বিশেষ করে মিষ্টি খাওয়ার প্রতি বিশেষ ঝোঁক থাকে। মানসিক চাপে থাকলে কিংবা শেষপাতে হোক বা হালকা খিদে পেলে— মিষ্টি দেখলেই হল! আসলে শরীরের কোনও না কোনও অঙ্গের সঙ্গে প্রতিটি বিশেষ স্বাদের যোগ রয়েছে। কিন্তু এই মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা মোটেই স্বাভাবিক নয়। সেক্ষেত্রে শরীরে বিশেষ কিছু পরিবর্তন এলে আমাদের মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

রাতে ঠিকঠাক ঘুম না হলে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে না। যেমন লেপটিন নামক হরমোন শরীরে ঠিক কোন খাদ্য কতটা প্রয়োজন, কোন খাবার আর খেতে ইচ্ছে করছে না— এই সবের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত না ঘুমালে সেই ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ভাজাভুজি, মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

অনেক সময় দেখা যায়, খুব বেশি  উদ্বেগ ও চাপের কারণে শরীরে কর্টিসল নামক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোন ইনসুলিনের ভারসাম্যকে বিঘ্নিত করে। তখন চিনিজাতীয় খাবার খেতে বেশি ইচ্ছে করে। এছাড়াও শরীরে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি খনিজের অভাব ঘটলে মিষ্টি খাওয়ার প্রতি ঝোঁক বাড়ে। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারকে পরিপাকতন্ত্র চিনিতে ভেঙে দেয়। যা রক্তের মাধ্যমে কোষে নিয়ে গিয়ে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। ফলে মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি ঝোঁক তৈরি হয়। যদি শরীরে চিনির ক্রেভিং থাকে, তবে বুঝবেন আপনার শরীরে প্রোটিন দরকার।

তাহলে মিষ্টি খাওয়ার লোভ যেভাবে সামলাতে পারেন- যখন মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে করবে তখন এক গ্লাস জল খেয়ে নিতে পারেন। পেট ভরে গেলে আর মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে করবে না। খিদের মুখে সামনে মিষ্টি দেখলে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা তৈরি হয়। তাই অল্প মাত্রায় বারে বারে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। মাছ, মাংস বা ডিম বা নিরামিষের ডাল, সোয়াবিন, পনির বেশি খেলে যেমন পেট অনেকক্ষণ  ভরা থাকে, তেমনই শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটে। এতেও মিষ্টি জিনিস খাওয়ার প্রবণতা দূর হয়। এছাড়াও টুকটাক খিদে পেলে মিষ্টি ফল কিংবা কিশমিশ, খেজুরের মতো ড্রাই ফ্রুটস খেতে পারেন।