ভিটামিন বি১২ লাল রক্তকণিকা তৈরির জন্য সবচেয়ে জরুরি ভিটামিন। এটির ঘাটতি শরীরে মস্তিষ্ক থেকে পায়ের স্নায়ুতন্ত্র পর্যন্ত নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। শরীরে এই ভিটামিন মূলত খাবারের মাধ্যমে পাওয়া যায়। তাই খাদ্যাভ্যাস সঠিক না হলে ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি এবং এর কারণে হওয়া জটিলতার মুখোমুখি হতে পারেন।

এই ভিটামিনের প্রধান উৎস নন-ভেজ খাবার। তাই নিরামিষভোজীদের মধ্যে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি বেশি দেখা যায়। ভিটামিন বি১২-এর অভাব অ্যানিমিয়া থেকে শুরু করে স্নায়ুর ক্ষতির মতো গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে, যা জীবনের স্বাভাবিক মান খারাপ করে দেয়। তাই ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতির প্রাথমিক লক্ষণগুলো জানা খুবই জরুরি—যার বেশিরভাগই প্রথমে পায়ে দেখা দিতে শুরু করে।

কী কী লক্ষণ পায়ে দেখা দিলে বুঝবেন ভিটামিন বি১২ কমে যাচ্ছে

অধিকাংশ মানুষ ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতির কারণে হওয়া ক্লান্তি, দুর্বলতা বা ফ্যাকাশে ত্বকের মতো সাধারণ লক্ষণ সম্পর্কে জানেন, কিন্তু শরীর প্রথম সংকেত দেয় পায়ের পরিবর্তনের মাধ্যমে, যা অনেক সময়ই উপেক্ষিত হয়। কী কী  লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন জেনে নিন।

আঙুলে ঝিনঝিনে অনুভব
ভিটামিন বি১২-এর অভাবে পেরিফেরাল নার্ভের সুরক্ষা কমে যায়, ফলে পায়ের আঙুলে হালকা চিমটি কাটা বা বিদ্যুতের শকের মতো অনুভূতি হয়। এতে স্নায়ু ঠিকমতো সংকেত পাঠাতে পারে না।

অসাড় বা অনুভূতি কমে যাওয়া
বি১২ কমে গেলে পায়ের আঙুল অসাড় লাগতে পারে। দীর্ঘদিন এভাবে চললে ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং পড়ে যাওয়া বা আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

জ্বালা বা পুড়ে যাওয়ার অনুভূতি
অনেকেই পায়ের আঙুলে গরম লাগা বা জ্বালাপোড়ার অভিযোগ করেন। এটি সাধারণত নিউরোপ্যাথিক ব্যথার লক্ষণ, যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ু মস্তিষ্কে ভুল সংকেত পাঠায়।

খিঁচুনি বা মাংসপেশি দুর্বল হওয়া
ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতিতে মাংসপেশি দুর্বল হতে শুরু করে। বিশেষ করে রাতের বেলায় পায়ে খিঁচুনি বেশি দেখা দিতে পারে, যা হাঁটাচলা বা দৈনন্দিন কাজকর্মে অসুবিধা সৃষ্টি করে।

ঠান্ডা বা ফ্যাকাশে পায়ের আঙুল
বি১২-এর অভাবে রেড ব্লাড সেল তৈরি কমে যায়, ফলে রক্তাল্পতা দেখা দেয়। তখন পায়ের তলা এবং আঙুল অস্বাভাবিক ঠান্ডা বা ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে।

শরীরে এই পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে দ্রুত ভিটামিন বি১২-এর মাত্রা পরীক্ষা করানো এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।