বর্তমান কর্মজীবনে সময়ের সঠিক ব্যবহার ও দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করা এক বড় চ্যালেঞ্জ। এমনিতেই পাহাড়প্রমাণ কাজের চাপ, তার উপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গুণগত মান বজায় রেখে কাজ শেষ করতে না পারলে বাড়ে মানসিক চাপও। এই চক্রব্যূহ থেকে বেরিয়ে আসতে চান সকলে, কিন্তু আক্ষরিক অর্থে তা অনেক সময়েই সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মত, কয়েকটি সহজ কৌশল মেনে চললেই কাজের গতি বাড়ানো এবং সময় নষ্ট কমানো সম্ভব। 

•    একসঙ্গে অনেক কাজ নয়ঃ একসঙ্গে অনেক কাজ নিলে সমস্যা বাড়ে। সব কাজ শেষ করতে না পারলে তা আরও বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই যতটা আপনার ক্ষমতা, ঠিক ততটাই দায়িত্ব নিন। এতে সময় মতো কাজ শেষ করতে পারবেন। অনেক চাপমুক্ত থাকবেন।

•    নিখুঁত হওয়ার ধারণা ছাড়ুনঃ কাজকে নিখুঁত করার চেষ্টা অনেক সময় গতি কমিয়ে দেয়। একাধিকবার সংশোধন, ছোটখাটো পরিবর্তন কিংবা বারবার পরীক্ষা করার ফলে সময় নষ্ট হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমেই নিখুঁত করার চেয়ে ‘যথেষ্ট ভাল’ অবস্থায় কাজ শেষ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। পরে প্রয়োজন হলে সংশোধন করা যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ বাঁসী রুটির অবিশ্বাস্য উপকারিতা! আয়ুর্বেদে প্রাচীন স্বাস্থ্যরহস্য, আধুনিক জীবনে নতুন গুরুত্ব


•    টানা কাজের মাঝে বিরতিঃ টানা কাজ করার মাঝে খানিকটা বিরতি নিন। সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন। কাজের বাইরে গল্প করার চেষ্টা করুন। এনার্জির জন্য ব্ল্যাক টি অথবা ব্ল্যাক কফি খেতে পারেন। অফিসের চেয়ার ছেড়ে খানিকটা বাইরের মুক্ত বাতাস লাগান।

•    অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দেওয়াঃ অনেক সময় আমাদের কাজের তালিকায় এমন কিছু থাকে যা মূল লক্ষ্য পূরণে খুব একটা জরুরি নয়। এসব ছোট কাজ বাদ দেওয়া বা পিছিয়ে দিলে বাকি গুরুত্বপূর্ণ কাজ দ্রুত শেষ করা যায়। ফলে সময় ও এনার্জি দুই-ই সাশ্রয় হয়।


•    অস্থির হবেন নাঃ হঠাৎ অনেকটা কাজের চাপ এসে গেলে অস্থির হবেন না। এতে কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শ্বাসের কিছু সহজ ব্যায়াম করতে পারেন। বড় শ্বাস নিয়ে তারপর খানিকক্ষণ ধরে রেখে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এই পুরো পদ্ধতিটা দশ বার করুন। এতে আমার হৃদযন্ত্রের উপর চাপ এবং মানসিক অস্থিরতা কাটবে। ১০ থেকে ১ উল্টোভাবে বার বার গুনলেও মন শান্ত হবে।


•    নির্দিষ্ট রুটিন  মানুনঃ কাজের নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলুন। এতে সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে সুবিধা হবে। একইসঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের জন্য সময় রাখতে হবে। নিজেকে সময় দিন। গান শোনা, গান গাওয়া, শরীরচর্চা, বই পড়া—কর্মক্ষেত্র ছাড়াও সারা দিনে পছন্দের  যে কোনও ধরনের কাজ করুন।

•    অতিরিক্ত চিন্তাকে পরিকল্পনা ভাবা বন্ধ করুনঃ অনেকে মনে করেন, দীর্ঘ সময় চিন্তা করলেই সেরা পরিকল্পনা তৈরি হয়। কিন্তু বাস্তবে এতে অনেক সময় কাজ শুরুতে দেরি হয়ে যায়। 

•    সিদ্ধান্তের সংখ্যা কমানঃ প্রতিদিন বহু সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে ‘ডিসিশন ফ্যাটিগ’ বা সিদ্ধান্তজনিত ক্লান্তি তৈরি হয়, যা কাজের মান কমায়। ফলে বিকল্প সীমিত রাখুন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিন। এতে অযথা দেরি না হয়ে সরাসরি কাজে মন দিতে পারবেন।