আজকাল ওয়েব ডেস্কঃ শীত পেরিয়ে গরমের দাপট শুরু হতেই পাল্লা দিয়ে বাড়ে  মশার দাপটও। শহরাঞ্চলে খুব বেশি লোডশেডিংয়ের সমস্যা থাকে না, কিন্তু মশার গুনগুন গানে কান ও জীবন দুটোই ঝালাপালা হয়ে যায়। শুধু তাই নয়,সঙ্গে থাকে মশার কামড়ে মশাবাহিত রোগের আক্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয়ও।
মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হলেও গরমের জ্বালায় তাও সম্ভব হয় না। শেষে ভরসা সেই মশা মারার  ধূপ ও স্প্রে। অনেকেই রাসায়নিক দেওয়া ‘রেপেলেন্ট’ নিজেরা ও শিশুদেরও গায়ে মাখিয়ে রাখেন। সঙ্গে সারাদিন ঘরে জ্বালিয়ে রাখেন মশা তাড়ানোর লিকুইড মেশিন।মশা প্রতিহত করার এই প্রত্যেকটি জিনিসেই ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো থাকে। বাড়িতে শিশু ও বয়স্ক অসুস্থ মানুষকে মশার কামড় থেকে বাঁচাতে এই সব জিনিস ব্যবহার করতেই হয়।উপায় আর কি?

মশা তাড়াতে এই সব জিনিস ব্যবহার করার ফল যে ভাল নয়, তা বলে থাকেন চিকিৎসকেরাই। মশার ধূপের ধোঁয়া থেকে ফুসফুসে নানা রকম সমস্যা হতে পারে। দরজা, জানলা বন্ধ করে ঘরে এসি চালালে এই সব ধূপ বা স্প্রে কোনওটিই ব্যবহার করা উচিত না।মশার কামড় ও
অস্বাস্থ্যকর ধূপের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে অন্য কোন উপায়ে রেহাই মিলবে জানা জরুরি।

সন্ধে‌ হতেই এই রক্ত চোষকদের আনাগোনা শুরু হয়। তাদের উপর আক্রমণ হানতে ধূপ থেকে মশা মারার তেল সবই ঘরে ঘরে জ্বলতে শুরু করে। এতে মশা কমে কিন্তু তা থেকে অন‌্য রোগের আশঙ্কাও ঘনিয়ে আসতে পারে। ডেঙ্গু,চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া আটকাতে গিয়ে 
 অন‌্য ক্ষতির কবলে পড়লে বিপদ বাড়বে। তাই এমন উপায়ে মশা তাড়ান যাতে মশাও মরে আর আপনিও নিরাপদ থাকেন।

বাড়িতে লেমনগ্রাস বা সিট্রোনেলা, পুদিনা এবং ল্যাভেন্ডার গাছ লাগান।এই গাছের গন্ধে মশা আসতে পারে না।

 ভেপারাইজার মেশিনে নারকেল তেল, নিমতেলের সঙ্গে সিট্রোনেলা তেল ও ইউক্যালিপটাস মিশিয়ে রাখুন।লবঙ্গ ও চন্দন তেলও মিশিয়ে রাখতে পারেন। চন্দনের গন্ধে মশা দিশাহীন হয়ে যায়।এই প্রাকৃতিক মিশ্রণগুলো জ্বালালে উপকার পাবেন।মেশিনের উপরে যে ছিদ্র থাকে তাতে কর্পূর রেখে দিন, মশা কাছে ঘেঁষতে পারবে না।

রাতে মশারি ব্যাবহার করুন।বাড়িতে ছোট শিশু ও বয়স্ক রোগী থাকলে এর চেয়ে সহজ ও নিরাপদ উপায় আর কিছুই নয়।

মশা মারার ক্রিম গায়ে মাখবেন না।এতে থাকে ক্ষতিকর রাসায়নিক যা অ্যালার্জি, দমবন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে।এর বদলে নারকেল বা সরষের তেলের সঙ্গে ৫ শতাংশ নিমতেল মিশিয়ে গায়ে মাখলে মশার কামড় থেকে বাঁচা সম্ভব এবং এটি স্বাস্থ্যকরও বটে।

সন্ধে‌বেলা ঘরে ধুনোর ধোঁয়া দিতে পারেন।নারকেল ছোবড়া আর ধুনো মিশিয়ে জ্বালালে তা শরীরের ক্ষতি করে না আর মশাও তাড়ায়।তবে খেয়াল রাখবেন, বাড়িতে অ্যালার্জি,সিওপিডি বা ছোট শিশু থাকলে এই ধোঁয়া থেকে তাদের দূরে রাখুন।

সূর্যাস্ত হওয়ার আগে দরজা জানলা বন্ধ করে দিন। অন্ধকার হলে খুলুন। জানলায় পাতলা জাল লাগিয়ে দিন তাহলে  মশা প্রবেশ করতে পারবে না। প্রয়োজনে দরজাতেও এই জাল লাগিয়ে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা করে দিন।