হঠাৎ কোমরের নিচে বা পিঠের একপাশে তীব্র ব্যথা অনুভব করছেন? সাধারণত এমন ব্যথাকে পেশিতে টান বা গ্যাসের সমস্যা বলে ধরে নেওয়া হয়।  অনেকে ‘ব্যাকপেইন’ ভেবে উপেক্ষা করেন। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এই ব্যথা কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রাথমিক সংকেত হতে পারে। বিশেষ করে যদি ব্যথাটি ঘন ঘন হয় বা দীর্ঘদিন ধরে হয়ে থাকে। কিডনিতে পাথর হলে প্রস্রাবের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে কিডনিতে চাপ বাড়ে এবং সংক্রমণ বা স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সময়মতো চিকিৎসা করানো জরুরি। 

পিঠে-কোমরের ব্যথা কিডনির সমস্যার কারণে কিনা কীভাবে বুঝবেন

•    ব্যথার প্রকৃতি ও তীব্রতা: কিডনির পাথরের ব্যথা সাধারণত হঠাৎ শুরু হয়। অত্যন্ত তীব্র হয়ে থাকে। যাঁরা এই ব্যথায় ভোগেন, তাঁরা এটিকে এক ধরনের ছুরিকাঘাতের মতো অনুভূতি হিসেবে বর্ণনা করেন, যেন ভিতর থেকে কেউ চেপে ধরছে বা খোঁচাচ্ছে। কখনও কখনও এই ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে বমি বমি ভাব বা বমি পর্যন্ত হতে পারে। অন্যদিকে, সাধারণ পিঠের ব্যথা বা গ্যাসের ব্যথা তুলনামূলকভাবে মৃদু, দীর্ঘস্থায়ী এবং পেশিতে টান ধরার মতো অনুভূত হয়। 

 

আরও পড়ুনঃ চড়চড়িয়ে বাড়বে সুগার, এই ৫ ফল খেলেই ডায়াবেটিসের দাপটে নিঃশব্দে শেষ হবে শরীর! বদলে কী খাবেন?


•    ব্যথার অবস্থান ও গতিবিধি: পাঁজরের নিচের অংশ থেকে কোমর পর্যন্ত বা পিঠের একপাশে হঠাৎ ও তীব্র ব্যথা শুরু হওয়া কিডনিতে পাথর হওয়ার সাধারণ লক্ষণ। ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসতে পারে এবং কয়েক মিনিট থেকে ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ব্যথা নিচে ছড়িয়ে পড়া: অনেক সময় কিডনির স্টোনের কারণে ব্যথা পেটের নিচের অংশ, কুঁচকি বা পুরুষদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। পাথরের অবস্থান বদলালে ব্যথার দিকও বদলাতে পারে। অন্যদিকে, সাধারণ পিঠের ব্যথা একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থাকে, মনে হয় যেন পেশিতে টান লেগেছে। গ্যাসের ব্যথা সাধারণত পেট বা উপরের পেটের দিকে অনুভূত হয়।


•    ব্যথার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য লক্ষণঃ কিডনিতে পাথরের ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের সময় জ্বালা, ঘন ঘন প্রস্রাবের তাগিদ, বা প্রস্রাবের সময় তীব্র অস্বস্তি হতে পারে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রস্রাব হঠাৎ কমে যাওয়া বা একেবারে বন্ধ হয়ে যেতেও দেখা যায়। প্রস্রাবের রং গোলাপি, লাল বা বাদামি হলে তা রক্তের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। যা সাধারণত পাথর মূত্রনালীতে ঘষা লাগানোর ফলে হয়। দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব কিডনি সংক্রমণ বা পাথরের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও কিডনির পাথরের ব্যথার সঙ্গে বমি ভাব, বমি, জ্বর দেখা দিলে সতর্ক হওয়া উচিত। 

 

আরও পড়ুনঃ পেটের জেদি থলথলে চর্বি কমতেই চায় না! আর কড়া ডায়েট নয়, সহজ টিপস মানলেই পাবেন নায়িকার মতো ফিগার


ছোট আকারের পাথর হলে সাধারণত বেশি জল খেলে এবং ওষুধের সাহায্যে নিজে থেকেই বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু বড় আকারের বা আটকে থাকা পাথরের ক্ষেত্রে ‘লিথোট্রিপসি’ (পাথর ভেঙে ফেলা) বা অস্ত্রোপচার প্রয়োজন পড়ে। ভবিষ্যতে পাথর এড়াতে পর্যাপ্ত জল পান, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা জরুরি।