ডায়াবেটিস হলে একাধিক বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে খাওয়াদাওয়ায় বাড়তি সচেতনা জরুরি। এমনকী ফল অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সব ফল ঠিক নয়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ফলের ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ ও প্রাকৃতিক চিনি এত বেশি যে তা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। সাধারণত যেসব ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫৫–এর নিচে, সেগুলোকে ডায়াবেটিসবান্ধব বলা হয়। এই ফলগুলি পরিমিত পরিমাণে খেলে রক্তে শর্করা বাড়ার আশঙ্কা কম থাকে। যেসব ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫৬-৬৯ এর মধ্যে বা এর বেশি, সেগুলো হিসাব করে খেতে পারেন। তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোন কোন ফল খাবেন না, বদলে কী খাবেন, জেনে নিন- 

১. আমঃ আমে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি থাকে। একটি মাঝারি আকারের আমে প্রায় ৪০–৪৫ গ্রাম শর্করা রয়েছে। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মানও তুলনামূলক বেশি। ফলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

আরও পড়ুনঃ পেটের জেদি থলথলে চর্বি কমতেই চায় না! আর কড়া ডায়েট নয়, সহজ টিপস মানলেই পাবেন নায়িকার মতো ফিগার

বিকল্প: বেরি জাতীয় ফল যেমন ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ইত্যাদি খেতে পারেন। এই সব ফলে কম চিনি, বেশি ফাইবার থাকে এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় নির্বিদ্ধায় খেতে পারেন।

২. পাকা কলাঃ পাকা কলায় স্টার্চ ভেঙে দ্রুত চিনি হয়ে যায়। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৬০-এর বেশি এবং কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকার কারণে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমস্যা হয়।
বিকল্পঃ পেয়ারা কম চিনি ও গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত কিন্তু ভিটামিন সি ও ফাইবারে সমৃদ্ধ। ফলে পেয়ারা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। 

৩. সবেদাঃ প্রতি ১০০ গ্রাম সবেদায় প্রায় ২০ গ্রাম চিনি এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৬৫–৭০, যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া এতে ফাইবারের পরিমাণও কম।

বিকল্প: আপেল বিশেষ করে খোসা সহ খেলে ফাইবার বেশি পাওয়া যায়, যা রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৪. আঙুরঃ ১০০ গ্রাম আঙুরে থাকে ১৬–১৮ গ্রাম চিনি ও এটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫০–৫৯। পাতলা খোসা ও কম ফাইবারের কারণে চিনি দ্রুত শোষিত হয়।

বিকল্প: বেদানা—কম চিনি ও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে, পাশাপাশি পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ যা ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়ায়।

আরও পড়ুনঃ ব্যথা-বেদনায় একেবারে কাবু! হাড়কে লোহার মতো মজবুত করতে পাতে রাখুন এইসব খাবার

৫. আনারসঃ পাকা আনারসে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৬৬–৯৪ পর্যন্ত হতে পারে। বেশি পরিমাণে বা শুধু এই ফল খেলে রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে।

বিকল্প: পেঁপে-কম শর্করা ও বেশি ফাইবার থাকায় হজমে সহায়ক এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়।