সুস্থতার জন্য শরীরে ক্যালসিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাড়ের প্রধান উপাদান ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস দুধ। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেরই দুধ কিংবা দুগ্ধজাত খাবার খাবার সহ্য হয় না। সেক্ষেত্রে আমাদের হাতের কাছে এমন একটি বীজ রয়েছে যা দুধের বিকল্প হিসেবে দারুণ কাজ করে। হাড় মজবুত করতে তিলবীজ যেন ‘সুপারফুড’। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই ছোট্ট বীজে এমন সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা হাড়কে মজবুত করার পাশাপাশি জয়েন্ট, ত্বক এবং পেশিকেও রাখে সুস্থ। সহজে বললে, তিল বীজ হাড়ের মজবুত ভিত্তি গড়ে তোলে প্রাকৃতিকভাবে।

সবচেয়ে বিস্ময়কর তথ্য হল, মাত্র ১০০ গ্রাম তিল বীজে প্রায় ৯৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে, যা দুধের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ বেশি। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের দৃঢ়তা বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা দুধ খান না বা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট, তাঁদের জন্য তিলবীজ হতে পারে সঠিক বিকল্প। এছাড়াও তিল বীজে রয়েছে জিঙ্ক ও ম্যাগনেসিয়াম, যা জয়েন্টের নমনীয়তা বজায় রাখে এবং কার্টিলেজ মেরামতে সাহায্য করে। নিয়মিত তিল খেলে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় ও অস্থিসন্ধির ব্যথা অনেকাংশে কমে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিল বীজে থাকা কপার ও ভিটামিন বি৬ প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে এবং শরীরে শক্তি উৎপাদনের প্রক্রিয়া দ্রুত করে। পাশাপাশি তিলের প্রোটিনে থাকা বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিড প্রাকৃতিকভাবে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। কোলাজেন হাড়, ত্বক ও সংযোগকারী টিস্যু মজবুত রাখে, যা শরীরের বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

শুধু তাই নয়, তিলবীজে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যৌগ সেসামিন ও সেসামল হাড়কে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যের প্রভাব দেরিতে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সামান্য পরিমাণ তিলবীজ যুক্ত করলে তা শরীরের সামগ্রিক হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য দুধের থেকেও বেশি উপকারী হতে পারে। সকালে খালি পেটে বা খাবারের সঙ্গে সামান্য ভাজা তিল খাওয়া গেলে তার পুষ্টিগুণ ভালভাবে শোষিত হয়।