আজকাল ওয়েবডেস্কঃ দিনের যে কোনও সময়ে এক চুমুকেই আসে এনার্জি, দূর হয় যাবতীয় ক্লান্তি। অনেকেরই সর্বক্ষণের সঙ্গী কফি। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়গুলির মধ্যে কফি অন্যতম। ভারতেও এর জনপ্রিয়তা নেহাত কম নয়। ঘুম থেকে উঠে কফির গন্ধ না পেলে যেন দিনটাই বৃথা! অনেকেই এমনটা মনে করেন। কেউ ব্ল্যাক কফি খেতে ভালবাসেন, কারওর পছন্দ দুধ কফি। কিন্তু বেশি কফি পান করা ভাল নয়, অনেক সময়েই এমন পরামর্শ শোনা যায়। তবে শুধু মনই ভাল করাই নয়, কফির স্বাস্থ্যগুণও প্রচুর। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে কফির বহুমুখী উপকার  রয়েছে। এমনকী নিয়মিত এই পানীয় পান করলে কমতে পারে বয়স, সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চমকে দেওয়া তথ্য। 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিন কফি পানের অভ্যাস মহিলাদের দীর্ঘায়ু এবং সুস্থ বার্ধক্যে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।গত ৩০ বছর ধরে প্রায় ৫০,০০০ মহিলার উপরে এই গবেষণায় চালানো হয়। যেখানে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে

 

আরও পড়ুনঃ রান্নাঘরে আর্থ্রাইটিসের 'অব্যর্থ' ওষুধ! ছোট্ট এই দানার গুণেই মিলবে শরীরের যাবতীয় ব্যথা-বেদনা থেকে স্বস্তি

 

গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, কফি মস্তিষ্কের তীক্ষ্ণতা, মনের জোর বাড়ায়, দীর্ঘস্থায়ী একাধিক জটিল রোগ থেকে দূরে রাখে। মধ্যবয়সে অর্থাৎ ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে যাঁরা নিয়মিত ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করেছেন  তাঁদের সুস্থভাবে বার্ধক্যে পৌঁছনোর সম্ভাবনা বেশি। অর্থাৎ ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সে কোনও গুরুতর দীর্ঘস্থায়ী রোগ, স্মৃতিশক্তির সমস্যা বা শারীরিক অক্ষমতা ছাড়াই জীবনযাপন করতে পেরেছেন।

গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে সঠিক পরিমাণে কফি খেলেই মহিলারা বিভিন্ন ধরনের রোগ দূরে রাখতে পারেন। ওই গবেষণায় মহিলাদের গড় দৈনিক ক্যাফেইন গ্রহণের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩১৫ মিলিগ্রাম। অর্থাৎ গবেষকদের মতে, প্রতিদিন এক থেকে দেড় কাপ কফি  পান সুস্থ বার্ধক্যের সম্ভাবনা ২ থেকে ৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট দেহকোষের ক্ষতি এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। গবেষকরা মনে করছেন, ক্যাফেইন ছাড়াও কফিতে থাকা অন্যান্য বায়োঅ্যাক্টিভ সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ সদর্থক ভূমিকা পালন করে। যদিও গবেষণায় নির্দিষ্ট সময় নিয়ে বিশদে বলা হয়নি, তবে সকালে কফিপানের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। 

বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে ক্যাফেইন বার্ধক্য রোধ করে এবং কোষের ক্ষতি হওয়া আটকাতে সহায়তা করে। এই গবেষণাটি ইস্টের উপর করা হয়েছিল যা মানুষের কোষের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মিল রয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন যে ক্যাফেইন ডিএনএ মেরামত এবং স্ট্রেস প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। যদিও মানুষের মধ্যে এই প্রভাবগুলি নিশ্চিত করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে এই গবেষণাটি ইঙ্গিত দেয় যে আপনার প্রতিদিনের কফি কয়েকটি বেশ পুরনো এবং শক্তিশালী কোষীয় প্রতিরক্ষা চালু করতে পারে।

কফিকে শুধুমাত্র একটি পানীয় হিসেবে বিবেচনা করলে হবে না। কফি হল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট-এর ‘পাওয়ার হাউস’ যা মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে এবং আপনার স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কফিতে থাকে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড এবং ক্যাফিন। কফি খেলে বিজ্ঞানসম্মত ৬টি উপকারিতা পাওয়া যায় যার ফলে কফির চাহিদা উত্তরোত্তর এত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কফি খাওয়া উপকারী হলেও চিনি দিয়ে কফি খাওয়া একেবারেই উপকারী নয়। সকালে বা বিকেলে কফি খাওয়ার চেষ্টা করবেন, রাতে কফি খাওয়া এড়িয়ে চলবেন। অতিরিক্ত কফি খেলে স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে।