আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি নেটমাধ্যমে রাশিয়ার একটি জন্মহার কমে যাওয়া নিয়ে ভাইরাল হয়েছে একটি পোস্ট। সেই পোস্টে বলা হয়েছে জনসংখ্যা হ্রাস মোকাবেলা করতে, রাশিয়া রাত ১০টার পর থেকে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চলেছে। উদ্দেশ্য যাতে দম্পতিরা একসঙ্গে আরও ভাল সময় কাটাতে উৎসাহিত হন। এমনকী জন্মহার আরও বাড়ানোর জন্য, সরকার রোমান্টিক ভ্রমণেরও আয়োজন করবে।
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?
ভাইরাল হলেও বিষয়টির সত্যতা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। একথা সত্য যে আগের মতো বাড়ছে না রাশিয়ার জনসংখ্যা! জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারিতে করা সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই দু’মাসে মাত্র ১৯০৪০০ শিশুর জন্ম হয়েছে রাশিয়ায়। সাম্প্রতিক কাল তো বটেই, এমনকী গত দু’শো বছরে এত কম জন্মহার এই প্রথম। বিষয়টি নিয়ে রুশ সরকার চিন্তিত বটে কিন্তু তাই বলে সরকারের তরফে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে কোনও খবর আসেনি। এই মর্মে সরকারি কোনও নোটিশও জারি হয়নি। বিষয়টি মিথ্যা প্রচার বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: ৮৫ বছর বয়সে মাধ্যমিকে বসেও ফের অকৃতকার্য! ইনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক স্কুলছাত্র
তবে অন্যান্য দিক থেকে নাগরিকদের সন্তানধারণে উৎসাহ দিতে কিছু নতুন নিয়ম আনতে পারে রুশ পার্লামেন্ট। দেশের জনসংখ্যা বাড়াতে কর্মচারীদের সবেতন ছুটি দিতে পারে সরকার। কিছুদিন আগেই এমন কথা জানান রাশিয়ার পুতিন ঘনিষ্ঠ এক সাংসদ।
২৫ বছরের ওই সাংসদের নাম গ্রেগরি আরাপোভ। প্রসঙ্গত রাশিয়ায় এখন বার্ষিক জনতাত্ত্বিক সপ্তাহ চলছে। সেই সপ্তাহকে কেন্দ্র করেই গ্রেগরি বলেন, “বহু নাগরিকের জন্য এই ছুটি একটা বিরল সুযোগ। একটু থামুন, শ্বাস নিন, মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পান। আর এসবের ফলে এমন একটি মানসিক অবস্থা আসবে যখন চিকিৎসক এবং মনোবিদরা সন্তানধারণের জন্য আদর্শ বলে মনে করেন।” রাশিয়ার তরুণতম সাংসদ গ্রেগরি আরও জানান, অবিবাহিত ব্যক্তিরাও এই ছুটি পাবেন, যাতে তাঁরা নতুন জীবনসঙ্গী খুঁজে নেওয়ার সুযোগ পান।
গত মাসে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা থেকেই জানা গিয়েছে রুশ সরকারের বহু চেষ্টার পরেও বাড়ছে না সেদেশের জন্মহার। পরিস্থিতি এতই গুরুতর যে রুশ শ্রমমন্ত্রী আন্তন কটিয়াকভ বিষয়টি নিয়ে একটি বিস্তৃত রূপরেখা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন। এমনকী সম্প্রতি এক পুতিনপন্থী যাজক আন্দ্রেই কাচেভ এও প্রস্তাব দেন, যে যে পুরুষ ৪০ বছরের আগে পিতা হতে পারবেন না তাঁদের উপর যেন ট্যাক্স চাপায় সরকার। বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, “রাশিয়ান জনসংখ্যাকে ধরে রাখাই জাতি হিসাবে আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। রাশিয়ার ভাগ্য নির্ভর করবে পৃথিবীতে রুশ জনসংখ্যা কত রয়েছে, তার উপরেই।”
