গর্ভাবস্থায় শরীরে বিভিন্ন বদল আসে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে হরমোনের তারতম্য হতে থাকে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে বর্ষাকালে সংক্রমণ, খাদ্যজনিত অসুস্থতা এবং হঠাৎ পিছলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর একবার সংক্রমণের ফাঁদে পড়লেই সন্তানের বড় ক্ষতি হতে পারে। এই সময়ে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন কোন নিয়ম মেনে চললে হবু মা ও সন্তান সুস্থ থাকবে, হদিশ দিলেন আইএলএস হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সর্বজিৎ রায়। 

* ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতাঃ প্রতিদিন মৃদু সাবান দিয়ে স্নান করুন। দেহের গোপন অংশগুলিও সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং শুকনো রাখতে হবে। ভিজে পোশাক দ্রুত পরিবর্তন করা জরুরি। এতে ছত্রাক সংক্রমণ ও মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি খাবারের আগে ও শৌচাগার ব্যবহারের পর সবসময়ে হাত ধোয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আরও পড়ুনঃ ন্টার পর ঘন্টা হাঁটা নয়, নতুন জাপানি পদ্ধতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলা নতুন ফিটনেস ট্রেন্ড

* পরিষ্কার জামাকাপড় পরুনঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের নিয়মিত কাচা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরা উচিত। নয়তো ময়লা জামাকাপড় থেকেও সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চাইলে গরম জলে জামাকাপড় কাচতে পারেন। গ্রীষ্মকাল বিদায় নিলেও বাতাসে আর্দ্রতার বেশি থাকায় প্যাচপ্যাচে গরম থেকেই যায়। তাই আরামদায়ক সুতির এবং ঢিলেঢালা পোশাকই পরুন। গর্ভাবস্থায় খানিকটা মাপের পোশাক পরলে আরাম পাওয়া যায়। 

* সঠিক পুষ্টি ও জলপানঃ গর্ভাবস্থায় সঠিক পুষ্টি ও পর্যাপ্ত জলপানও জরুরি। ঘরে রান্না করা টাটকা খাবার, ফল, শাকসবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। কাঁচা খাবার, রাস্তার খাবার ও কাটা ফল একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এগুলো থেকে সহজেই পেটের সংক্রমণ হতে পারে। পরিষ্কার, সেদ্ধ করা বা ফিল্টার করা জল এবং স্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন স্যুপ বা ডাবের জল পান করলে শরীরকে সুস্থ থাকবে।

* পিছলে যাওয়া থেকে সাবধানঃ পিছলে যাওয়া রোধে ভাল গ্রিপযুক্ত, জলরোধী ও আরামদায়ক জুতো পরুন। খোলা স্যান্ডেল বা হাই হিল এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। রাস্তায় কোথাও জল জমে থাকলে বা কাদা থাকলে সাবধানে হাঁটাচলার করুন।  

* ঘরের পরিচ্ছন্নতাঃ গর্ভবতী মায়েরা ঘর নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নিয়মিত বদলাতে হবে বিছানার চাদর। বাসি খাবার, দূষিত জল থেকে টাইফয়েড, হেপাটাইটিস-এর ভাইরাস ছড়াতে পারে। 

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীদের কি আলু খাওয়া উচিত? নাকি একেবারেই বাদ? ঠিকটা জানালেন বিশেষজ্ঞ

* মশা থেকে সাবধানঃ বর্ষায় কোথাও জমা জল, নোংরা-আবর্জনা যেন না থাকে। না হলে মশার উপদ্রবও বাড়বে। মশাবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করা এবং আশপাশে জমে থাকা জল পরিষ্কার রাখা দরকার।