আজকাল ওয়েবডেস্ক: হরমনপ্রীত কৌরের দলের একমাত্র বাঙালি প্রতিনিধি তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মোক্ষম সময়ে ব্যাট হাতে গর্জে উঠেছেন তিনি। আবার উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে তিনি ক্যাচ ধরেছেন আবার তাঁর গ্লাভস জোড়া উইকেট ভেঙে দিয়ে রান আউটও করেছেন। 

বঙ্গতনয়া রিচা ঘোষ দেশের শ্বাসপ্রশ্বাসে। আর মুম্বইয়ের ঢেউ আছড়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গেও।ঘরের মেয়ের বিশালাকায় সব ছক্কা দেখে স্থানীয় মানুষ আনন্দে আত্মহারা। রিচা তাঁদের গর্বিত করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ''শিলিগুড়ির মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত। এর আগে ঋদ্ধিমানকে আমরা পেয়েছি। আজ শিলিগুড়ির মেয়ে, আমাদের ঘরের মেয়ে রিচা যেভাবে ক্রিকেট খেলেছে, উইকেটের পিছনে যেভাবে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নিয়েছে, রান আউট করেছে এবং যেভাবে গোটা টুর্নামেন্টে ব্যাট করেছে, তাতে রিচাকে দেখে বাংলার মেয়েরা আরও বেশি করে ক্রিকেটে ঝুঁকবে। শিলিগুড়ি দেখিয়ে দিল, এ শহর কেবলই বাণিজ্যিক শহর নয়, শিলিগুড়ি খেলাধুলোর শহর, ক্রিকেটের শহর।'' 

মেয়ের হাতে কাপ উঠুক। এই দৃশ্য চাক্ষুষ করতে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন রিচার বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ ও মা স্বপ্না ঘোষ। বিশ্বকাপের প্রথম দিন থেকেই  তাঁদের প্রত্যাশা ছিল মেয়ে ফাইনাল খেলুক। কাপ ঘরে তুলুক। সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে অবশেষে।

আর মেয়ে রিচা কী বলছেন? মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো ফিনিশার হতে চাইতেন তিনি। তাঁর ব্যাটিং দর্শন একটাই, ''দেখো আর মারো।''  

 রিচা এখন ভারতীয় দলের হার্ডহিটিং ব্যাটসম্যান। যখনই রানের দরকার তখনই তিনি বল গ্যালারিতে পাঠান। এদিন ফাইনালে দলের প্রয়োজনে ২৪ বলে চটজলদি  ৩৪ রান করে যান। ৩টি চার ও ২টি বিশাল ছক্কা হাঁকান তিনি। গ্রুপ পর্বে এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে রিচার ব্যাট থেকে এসেছিল ৯৪ রানের ইনিংস। ভারত হেরে গেলেও রিচার ইনিংস দাগ কেটেছিল সমর্থকদের মনে। 

রবিবার ফাইনাল জেতার পরে রিচা বলছেন, ''আমরা এই ট্রফিটার জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আজ আমরা চ্যাম্পিয়ন। আমি নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারব না। আমরা যখন হাডল করে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখনই আমরা স্থির করেছিলাম, এটাই আমাদের শেষ ম্যাচ। নিজেদের সেরাটা দেব। ফাইনালের চাপ তো ছিলই। তবে তা নিয়েও আমি ভাল পারফরম্যান্স করেছি। আমি বড় শট খেলতে পারি, এই বিশ্বাস সবাই আমার উপরে রেখেছিল। এটাই আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার।'' 

আজ গোটা দেশের চোখে ঘুম নেই। ঘুম নেই শিলিগুড়িরও। মায়ের হাতের ফ্রায়েড রাইস আর চিলি চিকেন খেতে পছন্দ করেন রিচা। বিশ্বজয়ের পরে ঘরে ফিরে এই মেন্যুই চেখে দেখবেন সোনার মেয়ে।