ত্বকের লোমকূপগুলি শক্ত হয়ে ওঠাকেই চলতি কথায় বলে গায়ে কাঁটা দেওয়া। বিভিন্ন সময় আমাদের গায়ে কাঁটা দেয়। কখনও কারও স্পর্শে, কখনও কারও কথা শুনে, কখনও আবার গান শুনে রোম খাড়া হয়। গান শুনতে গিয়ে অনেকেরই শরীরে হঠাৎ শিহরণ জাগে বা মেরুদণ্ড বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বইতে থাকে। সাধারণ মানুষের কাছে এটি এক অদ্ভুত অনুভূতি হলেও বিজ্ঞানীরা একে বলছেন বিশেষ মানসিক প্রতিক্রিয়া। বিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় যার নাম ফ্রিশন।
কী এই ফ্রিশন? এটি হল গান, শিল্পকলা বা আবেগঘন দৃশ্যের প্রতি মস্তিষ্ক ও শরীরের তীব্র প্রতিক্রিয়া। হঠাৎ সুরের পরিবর্তন, গানের চূড়ান্ত উচ্চস্বর বা নাটকীয় আবেগী মুহূর্তে মানুষের মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। ডোপামিন মূলত আনন্দ ও সুখের অনুভূতি তৈরি করে। এর ফলেই শরীরে শিহরণ জাগে এবং গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।
আরও পড়ুনঃ সারা জীবন যৌন মিলন চান না? সঙ্গমে অনিচ্ছার আসল কারণ কী? নয়া গবেষণায় বিস্ফোরক তথ্য
কারা বেশি অনুভব করেন? গবেষণায় জানা গেছে, বিশ্বের প্রায় ৫৫ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ জীবনে কখনও না কখনও এই অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। তবে সবাই সমানভাবে এটি অনুভব করতে পারেন না। বিশেষত যাদের ব্যক্তিত্বে কল্পনাশক্তি প্রবল, নতুন অভিজ্ঞতা গ্রহণের মানসিকতা রয়েছে এবং বেশি আবেগপ্রবণ-তাদের মধ্যে ফ্রিশন বেশি দেখা যায়।
শারীরিক লক্ষণ কী হতে পারে? ফ্রিশন হলে শরীরে কিছু স্পষ্ট পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন- গায়ে কাঁটা দেওয়া, হঠাৎ শিহরণ অনুভব, শরীর কেঁপে ওঠা, মেরুদণ্ড বেয়ে ঠান্ডা স্রোতের মতো অনুভূতি ছড়িয়ে পড়া
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ফ্রিশন কোনও মানসিক বা শারীরিক অসুখ নয়। বরং এটি মানুষের সৌন্দর্যবোধ ও আবেগী প্রতিক্রিয়ার একটি বিশেষ রূপ। যারা এই অভিজ্ঞতা লাভ করেন, তারা গান, শিল্পকলা কিংবা প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতি তুলনামূলকভাবে বেশি সংবেদনশীল। মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, ফ্রিশন হল মানুষের মস্তিষ্কের এক অভিনব বৈশিষ্ট্য। এটি প্রমাণ করে যে সঙ্গীত বা শিল্প কেবল বিনোদন নয়, বরং মানুষের অনুভূতি ও মানসিক জগতকে গভীরভাবে নাড়া দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
