আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভেবেছিলেন খুঁজে পেয়েছেন প্রাণসখীকে। তার প্রেমে মত্ত হয়েই বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বিদেশ ভ্রমণই হয়ে দাঁড়াল দুঃস্বপ্নের মতো। যাঁকে ভালবেসে গিয়েছিলেন সেই প্রেমিকাই যুবককে বিক্রি করে দিল টাকার বিনিময়ে! আক্রান্ত যুবক চীনের বাসিন্দা। ১৯ বছরের যুবককে ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মায়ানমারে বিক্রি করে দেন তাঁর প্রেমিকা। প্রেমিকার বয়স মাত্র ১৭।

চীনের সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আক্রান্ত যুবকের দিদি দাবি করেন, একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ওই নাবালিকার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর ভাইয়ের। দিদির অভিযোগ ওই নাবালিকা প্রায়শই স্বল্প দৈর্ঘ্যের পোশাক পরে হাজির হতেন ভাইয়ের সামনে। করতেন ‘ছলা-কলা’। ক্রমেই তাঁদের সখ্য বাড়তে থাকে। নাবালিকা জানান, তাঁর বাড়ি মায়ানমারে। সেখানে তাঁর মা বাবা ব্যাংকে কাজ করেন। পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবসাও রয়েছে তাঁদের। আক্রান্ত যুবকের দিদির আরও দাবি, তাঁর ভাই সহজেই মানুষকে ভালবেসে ফেলত। সেই কারণে পাড়ার লোকজন তাঁকে ‘রসিক নাগর’ বলে গালমন্দও করত। তারই সুযোগ নেন ওই নাবালিকা। যুবককে মায়ানমারে তাঁর বাড়ি যাওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
এরপরই বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়ে নাবালিকার সঙ্গে দেখা করতে ব্যাংকক চলে যান যুবক। প্রথমে কিছু না জানতে পারলেও যুবক যে ব্যাংককে গিয়েছেন সমাজমাধ্যম দেখে সেকথা জানতে পারেন বাড়ির লোক। কিন্তু সেই ভ্রমণ কাহিনি বেশিদূর গড়ায়নি। অভিযোগ, ওই নাবালিকা তাঁকে থাইল্যান্ড মায়ানমার সীমান্তে নিয়ে যান। সেখানে ওই যুবককে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যান প্রেমিকা। নাবালিকা সরে পড়ার পরেই অস্ত্রধারী কয়েকজন যুবক হাজির হন সেখানে। তাঁরা যুবকের ফোন ও পাসপোর্ট কেড়ে নেন। তারপর তাঁকে বন্দি করে মায়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মায়ানমারে একটি প্রতারণা চক্রের আড্ডায় ক্রীতদাস করে রাখা হয় যুবককে। প্রায় চার মাস সেখানেই বন্দি ছিলেন তিনি। ন্যাড়া করে দেওয়া হয় মাথা। থাকার জন্য দেওয়া হয় একটি অন্ধকার কুঠুরি। দিনে ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা কাজ করতে হত তাঁকে। কাজ ঠিকমতো না করতে পারলে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হত। ঠিকমতো খেয়েও দেওয়া হত না। এতই অত্যাচার করা হয় যে ওই যুবক শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেন।

শেষ পর্যন্ত অপহরণকারীরা চীনে তাঁর বাড়ির লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। যুবকের বাড়ির লোক সেই টাকা দিয়েই ছাড়িয়ে নিয়ে যান যুবককে। তীব্র অত্যাচারে বধির হয়ে জুন মাসে দেশে ফেরেন যুবক। তবে মূল অপহরণকারীদের ধরা না গেলেও ধরা পড়েছেন ১৭ বছরের ওই নাবালিকা। কিছুদিন থাইল্যান্ডে কাটিয়ে তিনি আবার চিনে ফিরে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁকে পাকড়াও করে চীনের পুলিশ।