আজকাল ওয়েবডেস্ক: জিনিস যত কম, মনের শান্তি তত বেশি, এই সরল বিশ্বাস থেকেই জন্ম জাপানি মিনিমালিজমের। জাপানি ভাষায় একে বলে ‘দানসারি’। শব্দটির অর্থই হল বর্জন, সংযম ও মুক্তি। জাপানের প্রাচীন জেন-বৌদ্ধ দর্শনের প্রভাবে গড়ে ওঠা এই জীবনদর্শনে অতিরিক্ত ভোগের কোনও স্থান নেই।
আজকের যুগে, যেখানে ‘আরও চাই’ এই মনোভাব থেকে মানুষ ক্রমাগত ইঁদুর দৌড়ে অংশ নিচ্ছে, সেখানে জাপানি মিনিমালিজম যেন এক নীরব বিপ্লব। বাড়ি ভর্তি জিনিস নয়, বরং প্রয়োজনীয় ও অর্থবহ জিনিস রাখা, অপ্রয়োজনীয় আবর্জনা মুক্ত করা, ও সর্বোপরি মানসিক শান্তি খুঁজে নেওয়াই এই দর্শনের মূল কথা। পুরোনো কাগজ, অপ্রয়োজনীয় আসবাব, টেবিল-চেয়ার-কাবার্ড, এমনকী আর পরা হয় না এমন জামাকাপড় পর্যন্ত দান করে দেওয়া হয় এই জীবন যাত্রায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জীবনযাপন পদ্ধতির উপকারিতাও নেহাত কম নয়। একদিকে ঘর যেমন থাকে পরিপাটি ও খোলামেলা, তেমনই মনেও আসে প্রশান্তি। সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়, কারণ অপশন কম। এতে মানসিক চাপও কমে। ধরুন প্রাক্তন প্রেমিকার দেওয়া উপহার আপনি আগলে রেখেছেন। সেটিই দিনের পর দিন মনে করিয়ে দেয় তাঁর কথা। ফলে বিচ্ছেদের ভার হালকা হয় না কিছুতেই। কাউকে যদি মনের মণিকোঠায় রাখতেই হয়, তবে তাঁকে স্মৃতিতে রাখুন, নৈবদ্যে নয়। গবেষণা বলছে, মিনিমালিস্টদের মধ্যে অ্যাংজাইটি ও ডিপ্রেশনের হার তুলনামূলকভাবে কম।
জাপানে শুধু ঘর নয়, পোশাক, খাদ্য, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারেও মিনিমালিজমের ছাপ স্পষ্ট। ‘লেস ইজ মোর’, এই ভাবনাই জাপানি সংস্কৃতির শিরায় শিরায় প্রবাহিত হয়।