আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহম্মদ আলি যখন প্রথমবার হেভিওয়েট বক্সিংয়ে তৎকালীন চ্যাম্পিয়ন সনি লিস্টনকে চ্যালেঞ্জ করলেন, তখন অতি বড় বক্সিং বিশেষজ্ঞও ভাবতে পারেননি যে আলির মতো অল্পবয়সি একটি ছেলে সনি লিস্টনের মতো দৈত্যাকার একজন চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে দেবেন। কিন্তু সেদিন রিং এর ভেতর আলি যা করেছিলেন তাই ইতিহাস হয়ে গিয়েছে। পরবর্তীকালে আলি বলেছিলেন, প্রজাপতির মতো উড়তে উড়তে মৌমাছির হুল ফোটানোই লক্ষ্য ছিল তাঁর। তুই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করেই প্রথমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। কিন্তু শুধুই কি স্ট্রাটেজি না আলির জয়ের পেছনে ছিল অন্য কোন কারণ? অন্য কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক তিনি যে জিততে পারবেন সে কথা বিশ্বাস করতেন আলি নিজে। শুধু মহম্মদ আলি নন বহু কৃতি এবং খ্যাতনামা মানুষই বারংবার বলে থাকেন, তাঁদের সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে নিজের প্রতি বিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস থাকলে পঙ্গুও গিরি লঙ্ঘন করে। আর না থাকলে অতি সহজ হয়ে ওঠে কঠিন। কিন্তু মানুষের চরিত্র বিভিন্নতায় ভরা। কেউ কেউ যেমন আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ থাকেন তেমনি বহু মানুষ কিছুতেই নিজের উপর ভরসা করতে পারেন না। বিশেষ করে এই দ্বিতীয় প্রকার মানুষের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া খুবই জরুরি। তাহলে কীভাবে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন? কীভাবে পাবেন সাফল্য? রইল তারই কিছু কৌশল -
১। ইতিবাচক আত্মকথন: নিজের সঙ্গে নিজে ইতিবাচক কথা বলুন। নিজেকে বলুন, আমি পারবেন। আজ যতই কঠিন হোক না কেন আপনার পরিশ্রম আপনাকে জয়ী করবেই। বারংবার নিজেকে এই কথা বলতে থাকলে তো মানসিকতার মধ্যেও ঢুকে যায়। একইভাবে নেতিবাচক আত্মকথন এড়িয়ে চলুন। মনে নেতিবাচক চিন্তা আসতেই পারে। খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেই নেতিবাচক চিন্তাকেই চূড়ান্ত বলে ধরে নেবেন না। সেই চিন্তাকে ইতিবাচক চিন্তায় পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
২। যা কিছু সুন্দর: সুনজরে দেখলে বহু অসুন্দর জিনিসও সুন্দর লাগে। তেমনভাবেই একটি গ্লাসে যদি অর্ধেক জল থাকে, তাহলে আপনি তাকে কীভাবে দেখবেন? অর্ধেকখালি নাকি অর্ধেক ভর্তি? তার উপরে নির্ভর করে আপনি কোনও পরিস্থিতিতে কেমন আচরণ করবেন। নিজের জীবনে কী নেই তাই নিয়ে না ভেবে কী আছে, সেটা নিয়ে ভাবুন। এই ভাবনা আপনার মনকে ইতিবাচক রাখবে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।
৩। নিজের ত্রুটিগুলো মেনে নিন: কেউ নিখুঁত নয়। মানুষ মাত্রই তার ত্রুটি থাকবে। তাই নিজের ত্রুটিগুলো অস্বীকার করবেন না, মেনে নিন এবং কীভাবে সেই ত্রুটিগুলিকে নির্মূল করা যায় তার চিন্তা করুন। তাই বলে নিজের দুর্বলতাগুলো নিয়ে সর্বক্ষণ চিন্তা করবেন না। তাতে আত্মবিশ্বাস আরো কমে যেতে পারে। দুর্বলতার পাশাপাশি নিজের শক্তির দিকেও মনোযোগ দিন। ভেবে দেখুন আপনার কোন কোন ভাল গুণ রয়েছে। এই গুণগুলিকে আরও সুন্দর কীকরে গড়ে তোলা যায় তার দিকে মনোযোগ দেন। মনে রাখবেন, পরিশ্রম কখনও বিফলে যায় না। আজকে যদি আপনি নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য পরিশ্রম করেন তবে কঠিন পরিস্থিতিতেও আপনি ঠিক উতরে যাবেন।
৪। ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: যেকোনো বড় কাজই শুরু হয় ছোট্ট একটি পদক্ষেপের মাধ্যমে। তাই প্রথমেই বিশাল বড় কিছু ভেবে নেবেন না। বরং বড় লক্ষ্যগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন। ছোট লক্ষ্যগুলো অর্জন করলে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত লক্ষ্যটি অর্জন করা সহজ হবে। নিজের জন্য এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, যা অর্জন করা সহজ।
৫। আনন্দ করুন: সাফল্য যত ছোটই হোক, সেটা উদযাপন করুন। আপনি নিজের দক্ষতায় সেই লক্ষ্যে পৌঁছেছেন তাই নিজেকে কোনওভাবেই হেয় করবেন না। পাশাপাশি মাথায় রাখুন এই জয়, লক্ষ্যে পৌঁছনোর একটা সিঁড়ি মাত্র। ধীরে ধীরে এই সিঁড়ি দিয়ে উঠেই পৌঁছাতে হবে লক্ষ্যে।
