ফলের তালিকায়ও পেয়ারা এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। কিন্তু পেয়ারা শুধু সাধারণ কোনও ফল নয়—এর সবুজ খোসার ভিতর লুকিয়ে রয়েছে পুষ্টির ভান্ডার। দুনিয়া যখন চিয়া সিডস, অ্যাভোকাডোকে ‘সুপারফুড’ বলে প্রচার করে, তখন এই দেশজ ফলটিকে আমরা প্রায়ই উপেক্ষা করি। অথচ বহু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, সকালে খালি পেটে পেয়ারা খাওয়া শরীরের জন্য একপ্রকার আশীর্বাদ। জেনে নেওয়া, খালি পেটে পেয়ারা খেলে শরীরে কী কী উপকার হয়।

২০২৫ সালের একটি গবেষণা জানায়, পেয়ারা প্রাকৃতিক ডায়েটারি ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস। খালি পেটে এটি খেলে এতে থাকা ফাইবার এবং প্রাকৃতিক এনজাইম অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং বাওয়েল মুভমেন্ট উন্নত করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, অ্যাসিডিটি এবং হজমের সমস্যা কমে। নিয়মিত সকালে পেয়ারা খেলে হজমশক্তি আরও শক্তিশালী হয় এবং সারাদিন পেট হালকা লাগে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
খুব কম ফলেই এত বেশি ভিটামিন সি থাকে। হেলথলাইন-এর তথ্য অনুযায়ী, একটি পেয়ারায় প্রায় ১০৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়—যা দৈনিক প্রয়োজনের প্রায় দ্বিগুণ এবং একটি কমলালেবুর চেয়েও বেশি। খালি পেটে খেলে শরীর দ্রুত এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শোষণ করতে পারে, যার ফলে ইমিউনিটি বাড়ে। সর্দি-কাশি, ভাইরাল ফ্লু, ক্লান্তি—এসবের বিরুদ্ধে দারুণভাবে কাজ করে।

রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
পেয়ারা মিষ্টি হলেও এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। ২০১৬ সালের একটি গবেষণা জানায়, এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার  রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। খালি পেটে বা খাবারের আগে পেয়ারা খেলে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে রিলিজ হয়, ফলে রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামা কমে। ডায়াবেটিস-সচেতন মানুষদের জন্য এটি চমৎকার একটি সকালবেলার ফল।

ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর
দিনের শুরু যদি স্বাস্থ্যকর কিছু দিয়ে করতে চান, তবে পেয়ারা হতে পারে এক পরিপূর্ণ লো-ক্যালোরি স্ন্যাক। এতে প্রচুর ফাইবার ও জল রয়েছে, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় স্ন্যাকিং কমায়। খালি পেটে পেয়ারা খেলে মেটাবলিজম বাড়ে, ফলে ক্যালোরি দ্রুত বার্ন হয়। এর প্রাকৃতিক মিষ্টি সকালবেলার ক্রেভিংসও কমায়।

সংক্ষেপে, পুষ্টিগুণে ভরপুর পেয়ারা খালি পেটে খাওয়ার ফলে হজমশক্তি ভাল থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হয়—যা এটিকে দিনের শুরুতে এক অসাধারণ স্বাস্থ্যকর বিকল্প করে তোলে।