আজকাল ওয়েবডেস্ক: সন্তানকে কীভাবে ভাল মানুষ তৈরি করবেন তা নিয়ে বাবা মায়ের চিন্তার অন্ত থাকে না। ব্যক্তিমানুষ হিসাবে সন্তান কেমন হবে তার অনেকটাই নির্ভর করে সে কীভাবে বড় হচ্ছে তার উপর। তাই ছোট থেকেই সন্তানের আচরণ নিয়ে সতর্ক হতে হবে অভিভাবকদের। অনেক সময় সন্তান কথায় কথায় মেজাজ হারিয়ে ফেলে, জেদ করে, রাগারাগি করে, কেউ কেউ জিনিস পত্র ছোড়াছুড়িও করে। শুরু থেকেই ধৈর্য ধরে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলে বাচ্চাদের এই আচরণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
১. মেজাজ হারানোর কারণ চিহ্নিত করুন: প্রথমে বোঝার চেষ্টা করুন ঠিক কী কারণে আপনার সন্তান এত সহজে মেজাজ হারাচ্ছে। কোনও নির্দিষ্ট পরিস্থিতি, সময় বা বিষয় কি এর সঙ্গে জড়িত? রাগ বা খারাপ আচরণের পেছনে কি ক্লান্তি, ক্ষুধা, ভয়, মনোযোগের অভাব, নাকি অন্য কোনও কারণ আছে? কারণ খুঁজে বের করতে পারলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।
২. শান্ত থাকুন এবং সহানুভূতি দেখান: যখন আপনার সন্তান মেজাজ হারায়, তখন আপনি নিজে শান্ত থাকুন। তাদের রাগের প্রতিক্রিয়ায় চিৎকার করা বা বিরক্তি প্রকাশ করা পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে। অনুভূতির প্রতি সহানুভূতি দেখান। বলুন, "আমি বুঝতে পারছি তুমি এখন খুব হতাশ হচ্ছ" অথবা "তোমার খুব খারাপ লাগছে, তাই না?" তাদের অনুভূতিকে স্বীকৃতি দিলে তারা শান্ত হতে শুরু করবে।
৩. মেজাজ নিয়ন্ত্রণের কৌশল শেখান: আপনার সন্তানকে রাগ বা হতাশা সামলানোর বিভিন্ন কৌশল শেখান। যেমন - গভীর শ্বাস নেওয়া, দশ পর্যন্ত গোনা, পছন্দের কোনও কাজ করা (ছবি আঁকা, গান শোনা), অথবা কিছুক্ষণ একা থাকা। যখন তারা শান্ত থাকে, তখন এই কৌশলগুলো নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করুন।
৪. স্পষ্ট নিয়মকানুন তৈরি করুন: বাড়িতে কিছু স্পষ্ট নিয়মকানুন তৈরি করুন এবং সেগুলো নিয়মিত মেনে চলুন। কী ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য এবং কোনটি নয়, তা সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন। যখন তারা নিয়ম ভাঙে বা মেজাজ হারায়, তখন স্থিরভাবে পদক্ষেপ নিন। অনেক বাবা মা সন্তানের আবদার মেনে নেন। মনে রাখবেন এতে সন্তানের মেজাজ দেখানোর স্বভাব বাড়বে বই কমবে না।
৫. ইতিবাচক আচরণের প্রশংসা করুন: যখন সন্তান শান্ত থাকে, ভাল ভাবে কথা বলে বা মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তখন তাদের প্রশংসা করুন। বলুন, "তুমি আজ খুব শান্তভাবে নিজের মেজাজ সামলেছো, আমি খুব খুশি হয়েছি।" ইতিবাচক প্রশংসা তাদের ভাল আচরণ বজায় রাখতে উৎসাহিত করবে।
মনে রাখবেন, বাচ্চাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে আনার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ এবং ধৈর্য্যের ব্যাপার। হতাশ না হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান এবং প্রয়োজনে শিশু মনোবিদের পরামর্শ নিন।
