কথায় বলে, পেট ভাল থাকলে সব ভাল থাকে। পেটের সমস্যায় ভুগলে আরও অনেক শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। তালিকায় রয়েছে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, অরুচি, ডায়ারিয়া। তবে এই সবের মধ্যে সারা বছরই অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। ইদানীং অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রতি ঝোঁক, শরীরচর্চার অভাব সহ আরও অনেক কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। পাকস্থলী, অন্ত্রে খাবার শোষিত হয়ে তা মলদ্বারের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে আসে। এই প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে না হলেই কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। আপনিও কি দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন? প্রতিদিন সকালে পেটে ব্যথা, অস্বস্তি বা অনিয়মিত মলত্যাগে কষ্ট পান? তাহলে বাবা রামদেবের টোটকায় ভরসা রাখতে পারেন। যোগগুরু জানিয়েছেন, কয়েকটি ঘরোয়া উপায় ও নিয়মিত অভ্যাসের মাধ্যমে ওষুধ ছাড়াই এই সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোষ্ঠকাঠিন্য শুধু হজমের সমস্যা নয়, এটি শরীরে টক্সিন জমতে সাহায্য করে। যা পরবর্তীকালে ত্বক, হরমোন ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। বাবা রামদেবের মতে, কিছু প্রাকৃতিক উপায় মেনে চললে অন্ত্র পরিষ্কার থাকবে এবং শরীর থাকবে হালকা ও সতেজ।
১. সকালে গরম জল ও লেবু মধুঃ বাবা রামদেবের প্রথম পরামর্শ, দিনের শুরু হোক এক গ্লাস গরম জল, লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে। এটি শরীরের টক্সিন দূর করে, হজমে সহায়তা করে এবং মলত্যাগে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
২. যোগাসন ও প্রণায়ামঃ রামদেবের মতে, নিয়মিত পবনমুক্তাসন, ভুজঙ্গাসন ও কপালভাতি প্রণায়াম করলে অন্ত্র সক্রিয় হয়। রোজ সকালে ১৫–২০ মিনিট এই ব্যায়াম করলে হজমতন্ত্র স্বাভাবিকভাবে কাজ করে।
৩. আঁশযুক্ত খাবারঃ রামদেব মনে করেন, শরীরের সুস্থতার জন্য ফল, সবজি, গোটা শস্য ও স্যালাদ খাওয়া জরুরি। এই খাবারগুলোর ফাইবার অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করে।

৪. ঘুমের আগে গরম দুধে ঘিঃ রামদেব পরামর্শ দেন, রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধে আধা চামচ ঘি মিশিয়ে পান করলে অন্ত্রের শুষ্কতা কমে ও সকালে সহজে মলত্যাগ হয়।
৫. জীবনযাপনে পরিবর্তনঃ বাবা রামদেব বলেন, “খাবারের পরপরই শোবেন না, অন্তত ১০–১৫ মিনিট হাঁটুন। পর্যাপ্ত জল খান, দিনে ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমান এবং মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।”
ওষুধ নয়, শরীরের ছন্দ ঠিক রাখতে দরকার নিয়মিত অভ্যাস ও সঠিক জীবনযাপন। বাবা রামদেবের এই সহজ টোটকাগুলো মানলে কোষ্ঠকাঠিন্যের যন্ত্রণা থেকে মিলবে স্থায়ী আরাম। বিশেষজ্ঞদের মতেও এই ঘরোয়া উপায়গুলো দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ ও কার্যকর। তবে যদি সমস্যা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত
