আজকাল ওয়েব ডেস্কঃ পিরিয়ডসের সমস্যা কমবেশি সবাইকে নাজেহাল করে।সারা বছর ঋতুস্রাবের দিন এগিয়ে আসার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই মন অশান্ত হয়ে ওঠে।মাসের ওই চার পাঁচটা দিন প্রায় প্রত্যেকেরই কষ্টে কাটাতে হয়।ঘন ঘন মুড সুইং, পেট-কোমরের ব্যথা, অস্বস্তিবোধে কাতর হয়ে থাকেন মহিলারা।
আবার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পুজো দরজায় কড়া নাড়ছে।সেই সময় পিরিয়ডসের দিন পড়লে সবটাই তো মাটি।অষ্টমীর অঞ্জলী, দশমীতে মায়ের বরণ, পুজোয় রোজ নতুন জামার ভাঁজ খুলে পরার আনন্দ , কোনটাই তো হবে না।ভেবেই মন অস্থির করছে। শুধু পুজো নয়, বেড়াতে যাওয়া, যেকোনও অনুষ্ঠানেই এই চিন্তা মেয়েদের মাথায় আসে।ক্র্যাম্প হলে তো পেট ধরে শুয়ে থাকতে হবে।তবে কী করণীয়? অনেকেই বিশেষ এই ক'দিন ঝক্বি ঝামেলা এড়াতে কিছু ওষুধ খেয়ে নিজের ইচ্ছে ও প্রয়োজন মতো ঋতুস্রাবের দিন পিছিয়ে দিয়ে স্বস্তি পেতে চান। কিন্তু তার কতটা বৈজ্ঞানিক যুক্তি রয়েছে সেটিও ভেবে দেখার বিষয়।
ঋতুস্রাব স্বাভাবিক একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।নানা সংস্কার ও কুসংস্কার জুড়ে গিয়েছে বলেই এত সমস্যা হয়। মলমূত্র ত্যাগের মতো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে আটকানোর বা পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় না যেখানে, তা হলে ঋতুস্রাবই পিছোতে হবে কেন? মন্দিরে বা পুজো দেওয়ার সময় ঋতুস্রাব নিয়ে মহিলাদের এখনও নানা জায়গায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তার থেকেই এই পিছিয়ে দেওয়ার চিন্তা মেয়েদের মাথায় আসে।
ঋতুস্রাব মানে মাসের চার, পাঁচ দিন রক্তপাত হওয়ার পাশাপাশি হরমোনের ভারসাম্যও ওঠানামা করে।সবটাই হয় শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া মেনেই। তাই ঋতুস্রাব বন্ধ করতে বা পিছিয়ে দিতে চাইলে, পুরো শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকেই পরিবর্তন করতে হয়।ঋতুকালীন এই চক্র যদি পিছিয়ে যায়, তা হলে অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াও উল্টে যায়।
যে দিন থেকে পিরিয়ড শুরু হবে, তার দুই থেকে তিন আগে ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে।ঋতুস্রাব যত দিন পিছোতে চাইছেন, তত দিন ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করার তিন থেকে চার দিনের মাথাতেই শুরু হবে।একটানা ঋতুকালীন চক্রকে থামিয়ে রাখা এই প্রক্রিয়া ঘন ঘন চলতে থাকলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মাসিক চক্রের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। অনিয়মিত রক্তপাত, শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি ফুলে ওঠা, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, পেটে কোমড়ের যন্ত্রনা।মাইগ্রেন, হাঁপানির সমস্যা, মস্তিষ্কে ও ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে পরবর্তীকালে।হজমের গন্ডগোল শুরু হবে, ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে ব্রেষ্ট টিউমারও তৈরি হতে পারে।এই ধরণের ওষুধে প্রবল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়ে ফেললে তার খারাপ প্রভাব তো পড়ে।ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যাওয়ার পরেও তাকে থামাতে গর্ভনিরোধক ওষুধ খেয়ে বিপদ ঘটিয়ে ফেলেছেন কেউ কেউ। রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ দেখা গিয়েছে তাঁদের শরীরে। তাই এমন কাজ না করতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
