আজকাল অল্পবয়সেই শরীরে হানা দিচ্ছে একাধিক ক্রনিক রোগ। যার মধ্যে অন্যতম ডায়াবেটিস। গত কয়েক দশকে হু হু করে বেড়েছে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা। এক সময় মনে করা হত ডায়াবেটিস বয়স্কদের রোগ। কিন্তু বর্তমানে ৩০ পেরতে না পেরতেই ভোগাচ্ছে ব্লাড সুগার। এই রোগটি তখনই হানা দেয় যখন আমাদের শরীর কম ইনসুলিন তৈরি করতে শুরু করে অথবা সেই ইনসুলিন কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক ওষুধের সঙ্গে আরও বেশ কিছু বিষয়ে নজর রাখা জরুরি।

অনেকেই ওষুধের পাশাপাশি ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘরোয়া টোটকার সাহায্য নেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিসে নিয়মিত বেশ কিছু খাবার খেলে উপকার মেলে। আমাদের দেশে সস্তায় পাওয়া যায় তেমনই একটি 'সুপারফুড' হল কলা। এই ফলটি আমাদের শরীরের জন্য নানাভাবে উপকারী। আয়ুর্বেদ তো বটেই, আধুনিক বিজ্ঞানও সার্বিকভাবে সুস্বাস্থ্যের জন্য কলা খাওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ মানুষের কঠিন সমস্যার সমাধান করে চ্যাটজিপিটি! একদিনের জন্য সে মানুষ হলে কী করত? উত্তর শুনলে চোখ ভিজবে আপনারও

কলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই অনেকেই ডায়াবেটিসে কলা খেতে ভয় পান। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণা কিন্তু অন্য কথা বলছে৷ ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভাসের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হয় ঠিকই। সে যে খাবারই হোক না কেন, একটু ক্যালোরি বেশি থাকলেই নয় তা খাওয়া বারণ। আর নয় কম পরিমাণে খেতে হয়। তাছাড়া কলায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার পাওয়া যায়।  ডায়েটারি ফাইবার থাকার কারণে কলা হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে পেট পরিষ্কার রাখে। হজমের সমস্যায় অ্যান্টাসিডের থেকে অনেক ভাল কাজ করে কলা। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে সকালে উঠে দুটো কলা খেয়ে নিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রেকফাস্টে কলা খেকে ফাস্টিং ব্লাড সুগার কমে যেতে পারে। 

কলায় ক্যালোরির পরিমাণ খুব বেশি। নিয়মিত কলা খেলে ওজন বাড়তে পারে, এমন ধারণা রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এমন কোনও গবেষণায় দাবি করা হয়নি যে কলা খেলে ওজন বাড়ে। বরং বিশেষজ্ঞদের মতে, কলায় উচ্চমাত্রায় ফাইবার এবং কম ক্যালরি রয়েছে। এই কারণেই যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা নির্বিদ্ধায় এটি খেতে পারে। নিয়মিত ব্রেকফাস্টে কলা খেলে ফ্যাট মেটাবলিসম নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আরও পড়ুনঃ তরতরিয়ে কমবে ওজন, উধাও হবে সব শরীর-মনের রোগ! শুধু ৬-৬-৬ নিয়মে হাঁটলেই ম্যাজিকের মতো মিলবে ফল

কলায় রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত কলা খেলে পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। এমনকী এড়িয়ে যাওয়া যায় গ্যাস, অ্যাসিডিটির ফাঁদ। তবে কোনও জিনিসই মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া ভাল নয়। যেমন অত্যধিক পরিমাণে কলা খেলে দেহে ফাইবার বেশি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। যার ফলে হতে পারে ছোট-বড় পেটের সমস্যা। আয়ুর্বেদ মতে, নিয়মিত ৪০-৪৫ দিন পাকা কলা খেলে আপনি অনেক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।