আয়ুর্বেদে আমলকিকে অমূল্য 'উপহার' বলা হয়। শুধু ভিটামিন সি-এর উৎসই নয়, এটি এখন আধুনিক বিজ্ঞানেও 'হার্ট হেলথ হিরো' হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, নিয়মিত আমলকি খাওয়া শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রকে রাখে সুস্থ।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আমলকির ভূমিকা অপরিসীম। গবেষকরা জানিয়েছেন, আমলকির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান রক্তে থাকা ‘খারাপ’ কোলেস্টেরলকে (এলডিএল) অক্সিডাইজ হতে বাধা দেয়। এই অক্সিডাইজড কোলেস্টেরলই ধমনীতে জমে প্লাক তৈরি করে, যা হার্ট ব্লক বা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। আমলকি সেই ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। তাছাড়া এটি ‘ভাল’ কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়াতেও সহায়তা করে। ফলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং হার্টের উপর চাপ কমে।

আরও পড়ুনঃ পুষ্টিগুণে ঠাসা চিয়া সিড, তবু এখানেই লুকিয়ে বিপদ! জানেন কোন অসুস্থতায় এই বীজ এড়িয়ে চলা উচিত?

প্রদাহ ও রক্তনালীর স্বাস্থ্য রক্ষা করে আমলকি। এটির মধ্যে উপস্থিত পলিফেনল ও ভিটামিন সি শরীরে প্রদাহ কমায়। প্রদাহই অনেক সময় হৃদরোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি এটি রক্তনালীর অভ্যন্তরীণ প্রাচীর বা এন্ডোথেলিয়াম সুস্থ রাখে যা রক্ত চলাচল সহজ করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।

কীভাবে খাওয়া উচিত

পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি কাঁচা আমলকি বা এক চামচ আমলকির রস খাওয়া উপকারী। চাইলে শুকনো আমলকির গুঁড়োও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত খেলে চলবে না। কারণ এতে অ্যাসিডিটি বা পেটের অস্বস্তি হতে পারে। যাঁরা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান বা ডায়াবেটিসের রোগী, তাঁদের অবশ্যই আমলকি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আয়ুর্বেদে আমলকিকে বলা হয় ‘অমৃতফল’। শতাব্দী ধরে এটি চোখ, চুল, ত্বক ও হজমশক্তি ভাল রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।  বিজ্ঞানও বলছে, এই ছোট ফলের গুণ হার্টের কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। আমলকি শুধু রোগ প্রতিরোধে নয়, শরীরের সার্বিক ভারসাম্য রক্ষায়ও এক অনন্য ফল। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আমলকি রাখলে হার্ট থাকবে সুস্থ, আর শরীর পাবে অফুরন্ত এনার্জি।