জয়ন্ত ঘোষাল: প্রবল বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও মমতা ব্যানার্জির সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে এখনই সরানো হবে না। দু' দিন আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, বিনিত গোয়েল যাচ্ছেন। পুলিশ কমিশনারকে এবার সরে যেতে হবে, আর কয়েক ঘণ্টার ব্যাপার। কার্যত তিনি পুলিশ কমিশনারের বিদায়ের ঘণ্টা আগাম বাজিয়ে দিয়েছিলেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে শীর্ষস্তরে অনেক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, বিনীত গোয়েলকে এখন সরানো মানে বিরোধীদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করা হয়ে যাবে। বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগটা কী? তিনি আরজিকরের ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের তথ্য লোপাট করার ব্যাপারে কোনো ভূমিকা নেননি। এরকম কোন অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠেনি। সন্দীপ ঘোষের সাসপেন্সনের পর, সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ যাঁরা চিকিৎসক, প্রশাসন তাদের বেশ কয়েকজনকে সরিয়ে দিয়েছে, এবং এক এক করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সুতরাং হাসপাতালের দুষ্ট চক্র এবং ধর্ষণ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে সে ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, পুলিশ কমিশনারকে সরানোর প্রশ্ন উঠছে না, একথা রাজ্য সরকার কার্যত আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীরায় এরপর কী করবেন? কেননা অনেকেই তাকিয়ে আছে সুপ্রিম কোর্টের দিকে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানি। সুপ্রিম কোর্ট যদি পুলিশ কমিশনারের ব্যাপারে কোনও পর্যবেক্ষণ রাখে, তখন পরিস্থিতি আবার পর্যালোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু আপাতত সরকারপক্ষ মনে করছে যে, পুলিশ কমিশনারকে সরানো মানে বিরোধীদের কে আরও বেশি রক্তের স্বাদ পাইয়ে দেওয়া। তাতে লাভের থেকে লোকসান বেশি হবে। এই অবস্থায় আন্দোলনকারীরা কী করবেন? সেটার জন্য সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। অনেকেই মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে কী হয় সেটা দেখে এবং সিবিআই কী কী তথ্য নিয়ে আসে, তার ভিত্তিতেই পরবর্তী যাত্রাপথ তৈরি হবে।
এদিকে অভিষেক ব্যানার্জির চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখে যাওয়ার কথা ছিল মার্কিন মুলুকে। সেখানে গেলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য প্রায় দু-তিন মাস থাকতে হবে। যদিও, তিনি এই পরিস্থিতিতে যাওয়াটা একটু পিছিয়ে দিয়েছেন তিনি। সাংগঠনিক কাজগুলি সামলে তারপরই এ মাসের শেষে চোখের অপারেশনের জন্য পাড়ি দেবেন।
মমতা ব্যানার্জি এবং অভিষেক ব্যানার্জির মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। ছটা বিধানসভা উপ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই, বিভিন্ন জেলার পুর-নির্বাচন। সর্বোপরি সভাপতি এবং জেলা সভাপতি জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যান পদের নিয়োগ, এই বিষয়গুলি এখন বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেবে। এই কাজগুলি সেরে, তারপর অভিষেক প্রথম সপ্তাহে বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
