আজকাল ওয়েবডেস্ক: আলিপুরে ফের মৃত্যু হল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। গত তিন মাসে এই নিয়ে তিনটি বাঘের মৃত্যু হল আলিপুর চিড়িয়াখানায়। যা রীতিমতো উদ্বেগের। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে একটি সাব অ্যাডাল্ট রয়্যাল বেঙ্গল বাঘিনীর মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে তিন বছর পূর্ণ করত বাঘিনীটি। সূত্রের খবর, ওই বাঘিনী একটি জটিল রোগে আক্রান্ত ছিল। গত তিন–চারদিন ধরে আলিপুর পশু হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। বাঘিনীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে নমুনা ভিসেরা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওড়িশার নন্দনকাননে জন্মেছিল হলুদ কালো ডোরাকাটা বাঘিনীটি। আলিপুরে বাঘের প্রজননের জন্য নিয়ে আসা হয় গত বছর আগস্ট মাসে। বয়স হয়েছিল ২ বছর ১০ মাস। এত অল্প বয়সে মৃত্যুই ভাবাচ্ছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে।
বন দপ্তর সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে অনুমান, অসুস্থতার কারণেই মারা গিয়েছে বাঘিনীটি। ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। কোনও গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, পশু হাসপাতালে বাঘিনীর ময়নাতদন্তের পর গড় চুমুকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর আলিপুর চিড়িয়াখানা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই বাঘিনী পায়েল ও রূপার মৃত্যু হয়েছিল। যদিও ওই দুই বাঘিনীর বয়স হয়েছিল। কিন্তু এই বাঘিনী এখনও প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি। এই মৃত্যুতে আলিপুর চিড়িয়াখানায় হলুদ কালো বাঘেদের সংখ্যা কমে দাঁড়াল তিনটি। যার মধ্যে বাঘিনী মাত্র একটি।
এটা ঘটনা, ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চোরাশিকার থেকে শুরু করে বার্ধক্য ও রোগ, বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছরে ভারতে ৭৫০–র বেশি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। তালিকার শীর্ষে মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মোট ৭৫০–র মধ্যে ৩৬৯টি মারা গিয়েছে প্রাকৃতিক কারণে। চোরাশিকারীদের খপ্পরে প্রাণ হারিয়েছে ১৬৮টি বাঘ। এছাড়া, ৪২টি মারা গিয়েছে দুর্ঘটনা ও সংঘর্ষের মতো অজ্ঞাত কারণে এবং আরও ৭০টি মৃত্যুর সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি, জাতীয় ব্যঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের (এনটিসিএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৯–এই সাত বছরে বিভিন্ন রাজ্যে ১০১টি বাঘ মারা গিয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।
