আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র-ইলেক্ট জোহরান মামদানি অভিবাসীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন দপ্তর—আইসিই (ICE)–এর এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলা বা সহযোগিতা করা অভিবাসীদের বাধ্যতামূলক নয়। রবিবার প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, "আপনি যদি আপনার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হন, তাহলে আমরা সবাই আইসিই–র বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি।"
মামদানি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে নাগরিক ও অভিবাসীদের অধিকার রয়েছে নীরব থাকার এবং আইসিই–র যেকোনো প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার। পাশাপাশি, তিনি জানান যে আইসিই কর্মকর্তাদের ছবি বা ভিডিও করা বৈধ, যতক্ষণ না কেউ তাদের কাজে বাধা তৈরি করেন।
তিনি আরও বলেন, বৈধ জুডিশিয়াল ওয়ারেন্ট ছাড়া কোনও আইসিই কর্মকর্তা ঘরবাড়ি, স্কুল বা ব্যক্তিগত কর্মস্থলে প্রবেশ করতে পারেন না। মামদানির ভাষায়, “আইসিই আপনাকে ভুল তথ্য দিতে পারে বা মিথ্যা বলতে পারে। কিন্তু আপনার অধিকার রয়েছে নীরব থাকার এবং যদি আটক করা হয়, বারবার জিজ্ঞাসা করার – ‘আমি কি এখন যেতে পারি?’”
এই ভিডিও বার্তা আসে ম্যানহাটনের চায়নাটাউন এলাকায় সাম্প্রতিক এক আইসিই অভিযানের পর। সেই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিবাসী অধিকার কর্মীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন। গত অক্টোবরেও একই এলাকায় আরও একটি অভিযান নিয়ে জনরোষ দেখা গিয়েছিল। মামদানি জানান, এই ধরনের ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে অভিবাসীদের আইনগত অধিকার সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য সরবরাহ করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, “নিউ ইয়র্ক সব সময় অভিবাসীদের স্বাগত জানাবে। আমি প্রতিদিন লড়ব আমাদের অভিবাসী ভাইবোনদের পাশে থাকার জন্য।”
এই বার্তা প্রকাশিত হলো এমন সময়ে, যখন মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মামদানির হোয়াইট হাউসে সৌজন্য বৈঠক হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সাম্প্রতিক সময়ে নিউ অরলিন্সসহ বিভিন্ন অঞ্চলে অভিবাসন অভিযান বেড়েছে। যদিও মামদানি জানিয়েছেন, নিউ ইয়র্কের স্যাংচুয়ারি সিটি নীতিতে কোনও পরিবর্তন আসছে না।
গত মাসে ব্রঙ্কসের একটি গির্জায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, "আমি প্রেসিডেন্টকে স্পষ্ট জানিয়েছি যে নিউ ইয়র্কাররা তাদের শহরের আইন মানতে চায়। আমাদের স্যাংচুয়ারি নীতিতে বলা আছে, শুধুমাত্র প্রায় ১৭০টি গুরুতর অপরাধে শহর প্রশাসন ফেডারেল সংস্থার সঙ্গে তথ্য বিনিময় করতে পারে।"
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অনেক অভিবাসী গুরুতর অপরাধ ছাড়াই শুধুমাত্র ছোটখাটো বিষয়, আদালতে হাজিরা বা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার কারণে গ্রেপ্তার বা বহিষ্কারের ঝুঁকিতে পড়ছেন। তার ভাষায়, “সমস্যা হচ্ছে এই যে, বড় অপরাধের বাইরে অনেক নিউ ইয়র্কার শুধুমাত্র সাধারণ আদালত হাজিরার কারণে গ্রেপ্তার, আটক বা নির্বাসিত হচ্ছেন।”
জোহরান মামদানি ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। অভিবাসী সমাজ তার এই অবস্থানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে এবং অনেকেই মনে করছেন তার নেতৃত্ব নিউ ইয়র্কে অভিবাসী অধিকার রক্ষার সংগ্রামকে আরও শক্তিশালী করবে।
