আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমেরিকার টেনেসি অঙ্গরাজ্যে ন্যাশভিল শহরে চার্চের সামনেই প্রকাশ্যে ঘটে গেল নৃশংস ঘটনা। পুলিশের অভিযোগ অনুযায়ী, মহম্মদ মহম্মদ (৩৯) নামের এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন এক মহিলাকে চার্চের সামনের ফুটপাথে টেনে নিয়ে গিয়ে বারবার ধর্ষণ করেন। ওই মহিলাকে পরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ নলন্সভিল পাইক রোড ধরে একটি জরুরি ডাকে যাচ্ছিল ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। সেই সময় ক্রু সদস্যদের চোখে পড়ে চার্চের সামনে ফুটপাথে এক ব্যক্তি অচেতন এক মহিলার ওপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা সাইরেন বাজিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দেখতে পান, অভিযুক্ত মহম্মদ মহিলার প্যান্ট তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা দ্রুত তাকে আটকে ফেলে পুলিশে খবর দেন এবং আহত মহিলাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে ওই মহিলাকে ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।

ন্যাশভিল পুলিশ জানিয়েছে, চার্চের বাইরে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ৩৪ বছরের ওই গৃহহীন মহিলা একা হেঁটে আসছেন। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দুলছিলেন এবং সামনের সিঁড়িতে বসে পড়েন। তখন অভিযুক্ত মহম্মদ তার কাছে এসে বসে পড়েন এবং বারবার শারীরিকভাবে স্পর্শ করতে থাকেন। মহিলা মাঝে মাঝে অচেতন হয়ে পড়লেও প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। পরবর্তীতে মোহাম্মদ তাকে সিঁড়ি থেকে টেনে মাটিতে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ করে।

আরও পড়ুন: পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে মাত্র এক মাসের শিশুকে বিক্রি! অভাবের তাড়নায় যা করলেন বাবা-মা, শুনলে চোখে জল আসবে

চার্চের উল্টোদিকে কাজ করেন পল জনসন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন,“এটা খুবই দুঃখজনক এবং ভয়ঙ্কর। এই ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। রাতের বেলায় এমন অপরাধ এখানে ঘটছে ভেবে কষ্ট হচ্ছে। ভাগ্য ভালো যে ফায়ার সার্ভিস সময়মতো এসে পড়েছিল। মহম্মদ মহম্মদের বিরুদ্ধে অচেতন মহিলাকে চারবার ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। তাকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় এবং বর্তমানে ২ লক্ষ মার্কিন ডলারের (প্রায় ১.৬ কোটি টাকা) জামিনের শর্তে জেলে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলাকে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ন্যাশভিল এলাকায় গৃহহীন অবস্থায় বাস করছিলেন।


এই ঘটনা ন্যাশভিলের মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। খোদ চার্চের সামনে প্রকাশ্যে ধর্ষণ এবং পরবর্তীতে মৃত্যুর মতো ঘটনা শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি গৃহহীন মহিলা ও নেশাগ্রস্তদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই নৃশংস ঘটনায় অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে কিনা এবং মৃত মহিলার প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে কিনা, এখন সেটিই স্থানীয় সমাজের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।