আজকাল ওয়েবডেস্ক: মরক্কোর প্রাচীনতম শহর ফেজ-এ ভেঙে পড়ল দু’টি বহুতল। এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন। বুধবার মধ্যরাতে পাশাপাশি দু’টি চারতলা ভবন আচমকাই ভেঙে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভবন দু’টিতে আটটি পরিবার বাস করত। দীর্ঘদিন ধরেই সেগুলি অবহেলায় ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেজ মরক্কোর অনতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিক, পুলিশ এবং নাগরিক সুরক্ষা দল মধ্যরাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক SNRT তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রাথমিক মূল্যায়নে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে যে ভবনে কাঠামোতে দৃশ্যমান ফাটল দেখা দিয়েছিল। এর পাশাপাশি ভবনের কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সতর্কতা সত্ত্বেও কোনও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অষ্টম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তন রাজকীয় রাজধানী ফেজ মাত্র দুই মাস আগে, জীবনযাত্রার অবনতি, বেকারত্ব এবং জনপরিষেবার ব্যর্থতার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। মূলত তরুণদের নেতৃত্বে এই অস্থিরতা পরে গ্রামীণ শহরগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে বিক্ষোভগুলি সহিংস সংঘর্ষের রূপ নেয়। একটি নিরাপত্তা সদর দপ্তরে হামলা চালানোর চেষ্টা করার সময় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার আগে ৪০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারও করা হয়।

মরক্কোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো এখনও উত্তর-পশ্চিমে কেন্দ্রীভূত। যার ফলে ফেজের কিছু অংশ সহ অনেক অঞ্চল অপর্যাপ্ত আবাসন, সীমিত পরিষেবা এবং অসম উন্নয়নের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এত সমস্যার মাঝেই সে দেশের সরকার ২০৩০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের আগে বড় ধরনের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং নতুন স্টেডিয়াম তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছে। ২০৩০ সালে স্পেন এবং পর্তুগালের সঙ্গে বিশ্বকাপের আয়োজন করবে মরক্কো।

বুধবারের ভবন ধসের তদন্তে কাঠামোগত অবহেলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকগুলির নিরাপত্তা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের পূর্ব সতর্কতা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। উদ্ধারকারী দলগুলি দিনভর ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবারগুলির এখনও অনেকে নিখোঁজ। প্রিয়জনদের খোঁজে তারা অধীর অপেক্ষায়।