আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুনিয়ায় বিপ্লব আসে বহু রূপে — কখনো মানুষের হাতে, কখনো প্রকৃতির খেলায়। এবার সেই বিপ্লব নামছে পৃথিবীর গহীন স্তরে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আফ্রিকার বুক চিরে ধেয়ে আসছে এক ভয়ংকর পরিবর্তন — পৃথিবী পেতে চলেছে নতুন, ষষ্ঠ মহাসাগর! ২০০৫ সালে ইথিওপিয়ার মরুভূমিতে হঠাৎ এক অদ্ভুত ভূ-প্রকৃতির সৃষ্টি — ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাটল! তখন অনেকে ভাবলেন, হয়তো ভূমিকম্পের ক্ষণিক প্রভাব। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তখনই আঁচ পেয়েছিলেন, এ কোনো সাময়িক ঘটনা নয় — বরং লক্ষ বছরের গর্ভে লুকানো এক গম্ভীর বিপর্যয়ের শুরু।

আফ্রিকা মহাদেশের নিচে থাকা সোমালি টেকটনিক প্লেট আস্তে আস্তে আলাদা হয়ে যাচ্ছে নুবিয়ান প্লেট থেকে। যদিও প্রতি বছরে এই সরে যাওয়ার হার মাত্র কয়েক মিলিমিটার — কিন্তু সময়ই এখানে সবচেয়ে বড় কারিগর। বিজ্ঞানীদের মতে, ঠিক যেমন করে কোটি বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকা আলাদা হয়ে গিয়েছিল আফ্রিকার বুক থেকে, এবার আফ্রিকাও টুকরো হয়ে যাবে — এক নয়, দুই মহাদেশে!

এই প্লেট বিচ্ছেদের ফলে তৈরি হবে এক বিশাল ফাটল, যেখান দিয়ে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরের জল ঢুকে পড়বে, আর ক্রমশ তৈরি হবে এক সম্পূর্ণ নতুন মহাসাগর! আফ্রিকার ভেতরেই বইবে নোনাজলের নতুন ইতিহাস — একটি নতুন সমুদ্র, একটি নতুন ভূগোল, একটি নতুন পৃথিবী!

কখন হবে এই ভূ-পট পরিবর্তন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে সময় লাগবে প্রায় ১০ থেকে ৫০ লক্ষ বছর। তবে পরিবর্তনের চিহ্ন ইতিমধ্যেই স্পষ্ট — এবং এখন আর এটি কোনো 'সম্ভাবনা' নয়, বরং এক অনিবার্য বাস্তবতা। এই ঘটনা শুধুই আফ্রিকার ইতিহাস পাল্টাবে না, পাল্টে দেবে পৃথিবীর মানচিত্র। ষষ্ঠ মহাসাগরের আবির্ভাব মানুষের সভ্যতার জন্য এক যুগান্তকারী প্রাকৃতিক অধ্যায়। ঠিক যেভাবে প্যাঙ্গিয়া ভেঙে জন্ম দিয়েছিল মহাদেশের, এবার তেমনই এক নতুন যুগের সূচনা ঘটতে চলেছে আফ্রিকার অন্তরদেশে।