আজকাল ওয়েবডেস্ক: তাইওয়ানে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। মৃতের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে প্রায় ৮৫ লক্ষ তাইওয়ানি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা) একটি জাল 'প্রমিসরি নোট' তৈরির অভিযোগ উঠল। অভিযোগের ভিত্তিতে এক ঊনষাট বছর বয়সি প্রৌঢ়াকে দু'বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। উত্তর-পশ্চিম তাইওয়ানের সিনচু শহরে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, লি নামে ওই মহিলার সঙ্গে পেং নামের এক ব্যক্তির আর্থিক লেনদেন নিয়ে পুরনো বিবাদ ছিল। গত ২১ ফেব্রুয়ারি পেংয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই লি একটি জাল দলিল এবং প্রমিসরি নোট নিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শবাগারে ছুটে যান।
সেখানে পৌঁছে কর্মীদের লি জানান, তিনি পেংয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। কিন্তু তাঁর আচরণে কর্মীদের সন্দেহ দানা বাঁধে। অভিযোগ, পেংয়ের মৃতদেহ যখন শববাহী গাড়িতে রাখা ছিল, সেই সময় লি গাড়িতে উঠে বডি ব্যাগের চেন খোলেন এবং কালির প্যাডে মৃতের আঙুল ডুবিয়ে একটি কাগজে তাঁর টিপছাপ নিয়ে নেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক কর্মী বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে পেংয়ের পরিবারকে জানান। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লি-কে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছ থেকে একটি জাল দলিল, একটি চেক বই এবং একটি কালির প্যাড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পরে জেরার মুখে লি নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন। তিনি জানান, পেংয়ের কাছে তাঁর বেশ কিছু টাকা পাওনা ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর সেই টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না, এই আশঙ্কাতেই তিনি এই জালিয়াতির ছক কষেন। ২০১০ সালের ২৩ মে তারিখ দেওয়া একটি ভুয়ো জমির দলিল এবং পেংয়ের নামে একটি প্রমিসরি নোট তৈরি করেন তিনি, যাতে প্রমাণ করা যায় যে পেং তাঁর কাছ থেকে ৮৫ লক্ষ তাইওয়ানি ডলার ধার নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: বারে বারে জামিনের আর্জি খারিজ! সহ্য করতে না পেরে সংশোধনাগারের ভিতরে কব্জি কাটলেন ছয় নর্তকী
আদালত লি-কে জালিয়াতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে দু'বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। তবে, অপরাধ স্বীকার করে নেওয়া এবং জালিয়াতি করা চেকটি ব্যাঙ্কে জমা না পড়ার কারণে বিচারক তাঁর সাজা পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত রাখেন। একইসঙ্গে, সরকারকে ৫০ হাজার তাইওয়ানি ডলার (প্রায় ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা) জরিমানা এবং ৯০ ঘণ্টা সমাজসেবামূলক কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লি-কে।
সম্প্রতি এই ঘটনায় শবাগারের এক কর্মী হতবাক। তিনি বলেন, “আমি গত দু'দশক ধরে এই পেশায় আছি। কিন্তু এমন ঘটনা আগে কখনও দেখিনি।”
