আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্ধু ভেবে নিজেদের ফ্ল্যাটে থাকতে দিয়েছিল দম্পতি। মায়া জন্মেছিল যুবকের প্রতি। তাই ভাড়াও চেয়েছিলেন অত্যন্ত কম। কিন্তু ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই যুবকের আসল চেহারা প্রকাশ্যে আসে। সাত বছর পর ওই ফ্ল্যাটে চুপিসারে ঢুকেই আঁতকে উঠল দম্পতি। যে দৃশ্য দেখে রীতিমতো গা গুলিয়ে ওঠে তাদের।
জানা গেছে, ওই ফ্ল্যাটটিতে যুবক সাত বছর একাই ছিলেন। গত সাত বছরে ফ্ল্যাটের মালিককে একবারও ভিতরে ঢুকতে দেননি। শুধু তাইই নয়। সাত বছর ধরে ফ্ল্যাটের কোনও ভাড়াও দেননি। শেষমেশ একদিন কাউকে না জানিয়ে ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যান যুবক। সেই সুযোগে নিজেদের ফ্ল্যাটে যান বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা। দরজা আলতো করে খুলতেই চমকে ওঠেন।
বোঁটকা গন্ধে গা গুলিয়ে ওঠে তাঁদের। অত্যন্ত অপরিষ্কার, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ছিল ফ্ল্যাটের মধ্যে। দুর্গন্ধ নাকে আসতেই ঘরগুলিতে আর ঢুকতে পারেননি তাঁরা। বসার ঘরের দৃশ্য দেখেই ফের ফ্ল্যাটটি বন্ধ করে তাঁরা ফিরে আসেন। এরপর সেই ফ্ল্যাটের দশা জানান সকলকে।
আরও পড়ুন: বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরাচ্ছিল নববধূর, শুনেই ফুলশয্যার রাতে স্বামী যা ঘটালেন, দুই পরিবারে তুমুল ঝামেলা
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ইংল্যান্ডের ওয়ারউইকশায়ারের একটি শহরে। ৭০ বছরের ক্রিস ও ৫৮ বছরের স্যান্ড্রা ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন নিজেদের মেয়ের জন্য। ভাড়া হিসেবে ওই যুবকের থেকে অত্যন্ত কম দাবিদাওয়া ছিল তাঁদের। মাত্র কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেন।
দম্পতি জানিয়েছে, ভাড়া দেওয়ার পর প্রথম মাসে শুধুমাত্র ভাড়াটে টাকা দিয়েছিলেন। তারপর থেকে গত সাত বছরে একটিও টাকা ভাড়া হিসেবে দেননি। ২০২৪ সালে ফ্ল্যাটটি ছেড়ে নিশ্চুপে তিনি চলে যান। তারপরেই সেই ঘরে ঢোকার সুযোগ পান তাঁরা। তার আগে ফ্ল্যাটের মালিককে একবারও ভিতরে ঢুকতে দেননি যুবক।
ফ্ল্যাটের মালিক ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, ভিতরে ঢুকে দেখি কমপক্ষে তিন হাজার বিয়ারের ক্যান, বোতল গড়াগড়ি খাচ্ছে। কয়েকটি বোতলে মূত্রত্যাগ করে, সেভাবেই ঘরের মধ্যে ফেলে রেখেছিলেন। ঘরের মধ্যেও মূত্রত্যাগ করেন। বছরের পর বছর বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করে, খেয়ে সেই টুকরোগুলো ঘরের ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে দিয়েছিলেন। আর কয়েকটি বাক্সে মানুষের বর্জ্য পদার্থ পাওয়া গেছে।

বৃদ্ধ আরও জানিয়েছেন, বছরের পর বছর যুবক ফ্ল্যাটটি ভিতর থেকে বন্ধ করে রেখেছিলেন। কখনও কখনও বাইরে থেকে খাবার আনাতেন। সেই সব খাবার খেয়ে ঘরের ছড়িয়ে রাখতেন। ফ্ল্যাটের সমস্ত ঘর, বাথরুম, কিচেনের চরম দুর্দশা। যা এখন মেরামত করতেই কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হবে।
জানা গেছে, যুবক এর আগে তাঁবুতে থাকতেন। একটি সংস্থায় কাজ করতে গিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে আলাপ হয়। যুবকের সঙ্গে অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। তারপরেই ফ্ল্যাটে থাকার প্রস্তাব দেন। যুবক যে শেষমেশ এত বড় প্রতারণা করবেন, তা ভেবেই ভেঙে পড়েছেন তিনি। সর্বশেষ সংবাদ, বৃদ্ধের মেয়ে ২৮ বছরের তরুণী ফ্ল্যাটটি মেরামতের ব্যবস্থা করেছেন। যদিও তা আগের অবস্থায় ফেরাতে কয়েক মাস সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
