আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবারের পর উত্তাল মঙ্গলবারেও। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পরে, বিক্ষোভ প্রশমিত হওয়ার কথা ভেবেছিল নেপাল সরকার। কিন্তু হিতে বিপরীত! মঙ্গলেও দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে সেখানে।
রবিবার থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় নেপাল। পরিস্থিতি খারাপ হয় সোমবার। দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, গুলি, জলকামান। বেলা যত বাড়ে, ততই লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু সংখ্যা। পরিস্থিতি বিচারে সোমবার দুপুরেই জানা গিয়েছিল, নেপাল সরকার সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পুনরায় ভাববে।
#WATCH | Nepal: Drone visuals from the national capital city of Kathmandu as violent protests continue here over alleged corruption by the Government. pic.twitter.com/A2L10pqUXa
— ANI (@ANI)Tweet by @ANI
মৃত্যুমিছিলের মাঝে দাঁড়িয়ে পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, জেন-জি-দের প্রবল বিক্ষোভের মাঝেই একপ্রকার নতিস্বীকার করে নিয়েছে নেপাল সরকার। সোশ্যাল মিডিয়াগুলির উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে সোমবার গভীর রাতের বৈঠকের পরেই। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, তারপরেও দেশের নানা জায়গায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা পাথর ছুড়ে রাস্তায় নেমে আসার পর রাজধানী কাঠমান্ডু সহ দেশের বেশ কয়েকটি অংশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা প্রাসিডেন্টের বাড়ির সামনে গুলি চালিয়েছে। নতুন করে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফার দাবি উঠেছে।
সোমবার থেকে, ওলি সরকারের দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। বিক্ষোভকারীরা নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল ওরফে প্রচণ্ডের বাড়িতেও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার কাঠমান্ডুতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকারি বাসভবনে গুলি চালানো হয়েছে, তাতে একজন আহত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পোড়েলের বাসভবনের সামনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।
শুক্রবার থেকে নেপালে ফেসবুক, ইউটিউব এবং এক্স-সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রয়েছে, যার ফলে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার নয়। রবিবার থেকেই ছাত্র যুব, এককথায় জেন-জি-রা পথে। সোমবার বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়। অনেকের মতে, কেবল অ্যাপ ব্যান নয়, সামগ্রিকভাবে নেপালের পরিস্থিতি, সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, সব মিলিয়েই সামনে এসেছে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ। তবে পাশাপাশি কারণ যাই হোক না কেন, মূল কারণ, একযোগে একগুচ্ছ অ্যাপ ক্যাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। প্রশ্ন ঘুরছিল সোমবার বিকেল থেকেই, তাহলে কি পরিস্থিতি নিয়ে পুনরায় ভাবনা চিন্তা করবে নেপাল সরকার?
সোমবার বিকেলেই জানা যায়, সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী গুরুং সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। সূত্রের খবর, তিনি বলেন, 'সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণের জীবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।' একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমাদের জনগণের জীবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি নীতিগতভাবে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের এর বিরুদ্ধে অটল থাকার কোনও মানে হয় না।'
বৈঠকের পরেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে তার পরেই স্বাভাবিক হল না পরিস্থিতি। এসবের মাঝেই মঙ্গলবার জানা গিয়েছে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন যে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য তিনি সন্ধে ৬টায় সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন। তিনি বলেন, 'পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং একটি অর্থপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর জন্য আমি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির সঙ্গে আলোচনা করছি। সেই কারণেই, আমি আজ সন্ধে ৬টায় সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছি। এই কঠিন পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার জন্য আমি সকল ভাই ও বোনদের বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।'
