আজকাল ওয়েবডেস্ক: তানজানিয়ার মুহিমবিলি ন্যাশনাল হাসপাতালে এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে। সূত্রে জানা গিয়েছে চিকিৎসা করাকালীন চিকিৎসকরা এক ব্যক্তির বুকের ভেতরে আটকে থাকা একটি বড় ছুরির ফলা আবিষ্কার করেছেন, যা প্রায় আট বছর ধরে অজানাই রয়ে গিয়েছিল। ব্যক্তির বয়স ৪৪ বছর। ওই ব্যক্তি হাসপাতালে আসেন ডান বুকে ব্যথা এবং স্তনবৃন্ত (নিপল) থেকে পুঁজ বের হওয়ার অভিযোগ নিয়ে। এরপর তার এক্স-রে করতে চিকিৎসকদের চোখ কপালে। দেখা গিয়েছে, ব্যক্তির বুকের মধ্যে একটি ধাতব বস্তু আটকে আছে, যা অনেকটা ছুরির ফলার মত দেখতে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনা সম্প্রতি ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন-এ প্রকাশিত হয়েছে। একইসঙ্গে এটি মানবদেহের সহনশীলতার এক বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি বিগত দশ দিন ধরে তাঁর ডান স্তনবৃন্ত থেকে সাদা রঙের পুঁজ বেরোতে দেখছিলেন এবং হালকা অস্বস্তি অনুভব করছিলেন। তবে আশ্চর্যজনকভাবে, তাঁর কোনও ধরনের বুকের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কাশি বা জ্বর ছিল না।
চিকিৎসকদের প্রশ্নের জবাবে ওই ব্যক্তি জানান, আট বছর আগে তিনি এক সহিংস ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। সেখানে তাঁর মুখ, পেছন, বুক এবং পেট জুড়ে গুরুতর আঘাত লাগে। সেই সময় তাঁর ক্ষত স্থানগুলো শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে সেলাই করা হয়। এরপর ফের তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করেন। কিন্তু সেই সময় কোনও রেডিওলজিকাল পরীক্ষা না হওয়ায় বুকের মধ্যে ছুরির ফলাটি ধরা পড়েনি। এমনকী এতদিন তা দেহের ভেতরেই থেকে যায়।
চিকিৎসকরা তাঁর বর্তমান সংক্রমণের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে এক্স-রে করেন। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায় তাঁর বুকের মাঝামাঝি অংশে একটি ধাতব বস্তু রয়েছে, যার চারপাশে ধোঁয়াটে ছায়ার মতো চিত্র দেখা যায়। এই চিত্র থেকে বোঝা যায় সেখানে দীর্ঘদিনের জমে থাকা রক্ত বা ট্রমার পরবর্তী টিস্যু পরিবর্তন (ফাইব্রোসিস) হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, এটি সম্ভবত পুরনো ছুরির আঘাতের ফলে হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মুম্বইয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত! আটকে একাধিক স্কুলবাস, কোনওরকমে শিশুদের উদ্ধার করল পুলিশ
পরবর্তীতে চিকিৎসকরা জানান, পুঁজটি জমে থাকায় মৃত কোষ ও টিস্যুর কারণে তৈরি হয়েছিল। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সার্জনরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ছুরির ফলাটি এবং তার চারপাশের মৃত কোষ ও পুঁজ অপসারণ করেন। অস্ত্রোপচারের পর ওই রোগীকে ২৪ ঘণ্টার জন্য আইসিইউতে রাখা হয়। পরে তাঁকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি টানা ১০ দিন কাটিয়ে কোনও জটিলতা ছাড়াই অবশেষে সুস্থ হয়ে ওঠেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে৷
