আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৯৪৫-২০২৫। বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন আর দেখা হল না পদ্মাপারের। তার আগেই সমাপ্তি অধ্যায়ের।
দীর্ঘ রোগভোগের পর, মঙ্গলবার সকালে প্রয়াত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০। বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয়েছে পদ্মাপারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। খালেদা জিয়া। জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন। সামলেছেন বিএনপি। বসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মসনদে। মোট দু'বার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন খেলদা জিয়া। ১৯৯১ এবং ২০০১। একটা সময় পরে, বাঙ্গালদেশের রাজনীতির সামগ্রিক চর্চাও আবর্তিত হয়েছে তাঁকে এবং মুজিব-কন্যা শেখ হাসিনাকে ঘিরে।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অপর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লিগ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছে হাসিনার বার্তা। তাতে লেখা হয়েছে, 'বিএনপি চেয়ারপারসন ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাঁর ভূমিকার জন্য, জাতির প্রতি তাঁর অবদান ছিল তাৎপর্যপূর্ণ এবং স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবনের জন্য এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বের জন্য এক গভীর ক্ষতি। আমি বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার চির শান্তি কামনা করি। আমি তাঁর পুত্র তারেক রহমান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। আমি বৃহত্তর বিএনপি পরিবারের প্রতিও আমার সমবেদনা জানাই। আমি আশা করি সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাদের এই কঠিন সময় সহ্য করার জন্য ধৈর্য, শক্তি এবং সান্ত্বনা দান করুন।'
অন্যদিকে, শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি তার এক মহান অভিভাবককে হারাল।
মহম্মদ ইউনূস বলেন, 'বেগম খালেদা জিয়া শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রীই ছিলেন না; তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাঁর অবদান, তাঁর দীর্ঘ সংগ্রাম এবং তাঁর প্রতি জনগণের আবেগ বিবেচনায় নিয়ে সরকার চলতি মাসে তাঁকে রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র, বহুদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর আপোষহীন নেতৃত্বের ফলে গণতন্ত্রহীন অবস্থা থেকে জাতি বারবার মুক্ত হয়েছে, মুক্তির অনুপ্রেরণা পেয়েছে। দেশ ও জাতির প্রতি তাঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও জাতির কল্যাণে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা, গণমুখী নেতৃত্ব এবং দৃঢ় মনোবল সব সময় পথ দেখিয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত রাজনীতিককে হারাল।'
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি লিখেছেন, 'ঢাকায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর পরিবার এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।' সঙ্গেই লিখেছেন, 'বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, বাংলাদেশের উন্নয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান, সেইসাথে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে, সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।'
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি লিখেছেন, 'বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা অন্যতম জননেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে আমি শোকাহত। আমি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার,বন্ধুবান্ধব ও তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীদের আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।'
