আজকাল ওয়েবডেস্ক: নদীর জলবণ্টন নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার, পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ (PMD) সতর্ক করে জানিয়েছে যে, ভারত যদি পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত নদীগুলিতে অতিরিক্ত জল ছেড়ে দেয়, তাহলে দেশের বহু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। ভারী বর্ষা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে, সেই সহ্গেই হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি রয়েছে, যা হিমবাহের হ্রদ আউটবার্স্ট বন্যা (GLOFs) নামে পরিচিত। ফলে পাকিস্তানিদের শঙ্কা ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। চাপ বাড়ছে শরিফ সরকারেরও।

'দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন'-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের বেশিরভাগ নদী বর্তমানে স্থিতিশীল, তবে চেনাব নদীতে বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে। পিএমডির ডিরেক্টর মেহের সাহেবজাদ খান জানিয়েছেন যে, ভারতীয় বাঁধগুলিতে জল সঞ্চয়ের কারণে, রাভি নদীতে বর্তমানে হু-হু করে জল বইছে। এছাড়া, ঝিলাম এবং শতদ্রু নদীতে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যার কোনও আশঙ্কা নেই, তবে চন্দ্রভাগা নদীর পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগের।

আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
পিএমডির ডিরেক্টর মেহের সাহেবজাদ খান উল্লেখ করেছেন যে, বর্তমান মৌসুমি বৃষ্টিপাত ২৫ জুলাই, শুক্রবার পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, তার পরে মাসের শেষের দিকে আরও এক দফা ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এই অব্যাহত বৃষ্টিপাত, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে, জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি করতে পারে এবং বন্যার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, "বৃষ্টি ক্রমাগতভাবে বাঁধের জমা জলের স্তর বাড়িয়ে দিচ্ছে, এবং যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, বিপদ এখনও কেটে যায়নি। মাসের শেষ নাগাদ তীব্র বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগের।"

আরও পড়ুন-  যুদ্ধে আর লাগবে না সেনা, চিনের হাতে চলে এল মারাত্বক শক্তি

পাক দৈনিক আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করে জানিয়েছে- তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং তীব্র বৃষ্টিপাত হিমবাহের হ্রদ থেকে হঠাৎ জল ছেড়ে দিতে পারে। এর ফলে নদীতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে এবং তা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। 

পাকিস্তানের দুর্যোগ মোকাবিলার সঙ্গে সম্পর্কিত সব সংস্থাগুলিকেই সজাগ থাকতে নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের প্রশাসন। 

পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি
প্রায় আড়াই সপ্তাহ টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানে। জলে ভাসছে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত সোমবার পর্যন্ত (২১ জুলাই, ২০২৫) মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এক কোটিরও বেশি মানুষ। মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির হিসেবে শীর্ষে পঞ্জাব প্রদেশ। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১২৩ জনের। খাইবার পাখতুনখাওয়ায় মারা গেছেন ৪০ জন। সিন্ধু প্রদেশে ২১ জন। বালোচিস্তানে ১৬ জন এবং রাজধানী ইসলামাবাদ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এক জন করে নাগরিক বন্যা জলে ডুবে, ভূমিধস-সহ অতিবৃষ্টিজনিত নানা দুর্ঘটনায় বা বজ্রপাতের মারা গিয়েছেন। পাশাপাশি, এ পর্যন্ত ৫৬০ জন আহত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ১৮২ জন শিশু। পুরোপুরি ধ্বংস বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি! পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সেনাবাহিনীকেও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। 

আরও পড়ুন-  বাড়ির কুকুর টিভি দেখতে পছন্দ করে, তাহলে ভুলেও এই কাজটি করবেন না, তাহলেই....

আরও পড়ুন- আর ভারতীয় নয়, আমেরিকানদের চাকরি দাও, গুগল-মাইক্রোসফটকে নির্দেশ ট্রাম্পের