আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তার জন্য এবার প্রবল সমালোচনার সামনে পড়েছে আইএমএফ। কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে ভয়ানক জঙ্গি হামলার কয়েকদিন পর এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার পরিবেশের মধ্যেই পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলার অনুমোদনের জন্য এবার সকলের নজরে পড়েছে আইএমএফ।
ইন্ডিয়া টুডের খবর থেকে জানা গিয়েছে, এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি-র অধীনে শুক্রবার অনুমোদিত এই কর্মসূচির অধীনে মোট অর্থপ্রদান করা হবে ২.১ বিলিয়ন ডলার। এই টাকা পাবেন পাকিস্তান। এছাড়াও আইএমএফ স্থিতিশীল এবং স্থায়িত্ব সুবিধা আরএসএফ-র অধীনে ১.৪ বিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে। তবে যে সময়ে এই ঘোষণা করা হল সেটি এখন তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। শুধু ভারতীয় কর্তারা এবং বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে নয় বরং বিভিন্ন মহল থেকেই এই সমালোচনার ঝড় উঠে এসেছে।
ভারত আইএমএফ নির্বাহী বোর্ডের সভায় ভোটদানে বিরত ছিল। এটি আইএমএফ প্রোটোকলের সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে ভারতের বিরোধিতাকে সামনে নিয়ে এসেছে। ভারত এবিষয়ে তীব্র বিরোধ করেছে। ভারতের অভিযোগ, গত ৩৫ বছর ধরে বারবার একইভাবে পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান যদি সত্যিই এই অর্থ সঠিক খাতে খরচ করত, তাহলে আর নতুন করে ঋণের প্রয়োজন হত না। ২০২১ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে এও দাবি করা হয়, প্রজাতান্ত্রিক সরকার থাকলেও সামরিক বাহিনী বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তানের রাজনীতিতে ঢুকে পড়ে। সেই সংক্রান্ত খরচও প্রচুর। সীমান্ত পার করে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগও করা হয় ভারতের পক্ষ থেকে। সর্বোপরি আইএমএফ-এর ঋণে আপত্তি জানিয়ে, ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে ভারত।
ভারতীয় কূটনীতিক এবং পররাষ্ট্রনীতিবিদদের যুক্তি ঋণ অনুমোদন এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভুল সঙ্কেত দিল। প্রাক্তন পররাষ্ট্র সচিব কানওয়াল সিবাল এই সিদ্ধান্তকে "ভয়ঙ্কর দৃষ্টিভঙ্গি" বলে অভিহিত করেন। তিনি আরও বলেন যে, আইএমএফের শাসনব্যবস্থা পশ্চিমী শক্তি দ্বারা পরিচালিত।
একজন সুপরিচিত মনোবিজ্ঞানী যশবন্ত দেশমুখ বলেন, আইএমএফের "হাতে রক্ত লেগে আছে"। একইভাবে, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সুশান্ত সারিন বলেছেন যে, এই তহবিলের ফলে পাকিস্তান বাড়তি উৎসাহ পাবে।
ভারত দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছে যে পাকিস্তান আইএমএফের সহায়তা নিয়মিতভাবে অপব্যবহার করছে। গত ৩৫ বছরে পাকিস্তান ২৮টি আইএমএফ প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছে। তবে স্থিতিশীলতে তারা দেখাতে পারেনি।
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও আইএমএফ-কে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, আইএমএফ ভারতীয় শহরগুলিতে হামলার জন্য "মূলত পাকিস্তানকে ক্ষতিপূরণ" দিচ্ছে, সেখানে কীভাবে এই উত্তেজনা কমার জন্য আশা করা যায়।
নির্বাসিত প্রাক্তন আফগান সংসদ সদস্য মরিয়ম সোলাইমানখিল নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন। "বিশ্ব কতদিন পাকিস্তানকে হত্যার জন্য অর্থ প্রদান করবে?"
