আজকাল ওয়েবডেস্ক: অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক একপ্রকার তলানিতে। কিন্তু পাকিস্তানের আচরণ যেন, তাদের নিজেদের রূপ আরও একবার সামনে আনল। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, সরকার অনুমোদিত ভিসায় পাকিস্তান ভ্রমণকারী ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের চরম হেনস্থা করেছে পাক সরকার। বিষয়টি কেবল স্বাভাবিক হয়রানির ঘটনায় আটকেও নেই, অনেকের মতে, এই ঘটনা দু'দেশের কুটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে বড় উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।
বুধবার পাকিস্তান হাই কমিশন জানিয়েছে যে তারা গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের আগে ভারত থেকে আসা ২,১০০ টিরও বেশি শিখ তীর্থযাত্রীকে ভিসা দিয়েছে। তবে, ওয়াঘা সীমান্তে, একটি বৃহত্তর শিখ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পাকিস্তানে প্রবেশকারী হিন্দুদের একটি দলকে হঠাৎ করেই এগিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। সেখানে ভারতীয় হিন্দু তীর্থযাত্রীরা চরম হেনস্থার শিকার হন। অথচ তাঁদের কাছে সেই সময় প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা কেউ এ দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কিংবা অন্য কোনও খাতেও জনপ্রিয় কোনও ব্যক্তি ছিলেন না। তাঁরা প্রত্যেকেই সাধারণ নাগরিক ছিলেন। তীর্থযাত্রীরা দাবি করেছেন যে, তাঁদের সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও, কর্মকর্তারা তাদের নানকানা সাহেব গুরুদ্বারে যেতে দেয়নি।
ঘটনাটি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পরেছে ব্যাপক হারে এবংস শুরু হয়েছে চর্চা। নেটিজেনরা একদিকে যেমন পাকিস্তানের আসল রূপ প্রকাশ্যে এসেছে বলে মনে করছেন, অনেকেই বলছেন, এভাবেই হিন্দু-মুসলিম বিভেদ তৈরি করছে পাকিস্তান। শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের ৫৫৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য তাঁর জন্মস্থান নানকানা সাহিব পরিদর্শন করতে পাকিস্তানে যাচ্ছিল ওই দলটি।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ- অপারেশন সিঁদুরের পর, এটিই প্রথম শিখ জাঠা যা পাকিস্তানে ভ্রমণ করেছিল। এর আগে, ভারত সরকার নিরাপত্তার উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে জাঠাটি পাকিস্তানে পাঠাতে সম্মতি জানায়নি। সেই সময়, শিরোমণি আকালি দল (এসএডি) দলের সভাপতি সুখবীর সিং বাদল এই পদক্ষেপকে ভাবাবেগে আঘাত, ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেছিলেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'শ্রী নানকানা সাহিব ভ্রমণের ব্যাপারে শিখ ভক্তদের গভীর ধর্মীয় অনুভূতি জড়িত। কর্তারপুর করিডোরটি খুলে দেওয়া উচিত।' তার পরে এতাই ছিল প্রথম ভ্রমণ।
একাধিক সূত্রের মতে, এই সমস্যাটি কেবল প্রশাসনিক নয় বরং ইচ্ছাকৃত উত্তেজনা এবং সামাজিক সমস্যা তৈরির চেষ্টা। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ইচ্ছাকৃত এই দুর্ব্যবহার দু' দেশের আদান-প্রদান মানসিকতা, একে অন্যেরে প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার ভাবনাকেই আঘাত করে।
