আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিম্পাঞ্জি ও বনোবোদের মধ্যে মানুষের ভাষা শেখার চেষ্টা বহু দশক ধরে বিজ্ঞানীদের ভাবিয়েছে। কানজির মতো ‘টকিং’ এপদের মৃত্যু শুধু একটি প্রাণীর অবসান নয় — বরং এক যুগের, এক দৃষ্টিভঙ্গির, এক সাহসী বৈজ্ঞানিক স্বপ্নের সমাপ্তি। তাদের মৃত্যু আমাদের নতুন করে ভাবায়। প্রাণীজগতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কতটা ন্যায়সঙ্গত, আর কতটা মানবকেন্দ্রিক? ভাষা শেখার আশ্চর্য ক্ষমতাসম্পন্ন বনোবো (bonobo) কানজি প্রয়াত হয়েছে। ১৯৮০ সালে জন্ম নেওয়া কানজি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে মারা যায়। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হল ‘টকিং’ এপদের গবেষণার একটি যুগ।

জর্জিয়ার এক গবেষণা কেন্দ্রে ১৯৯০-এর দশকে প্রথম দেখা হয়েছিল জীববিজ্ঞানী বারবারা জে. কিং-এর সঙ্গে কানজির। সেদিন কিং তার পকেটের গোল বস্তু দেখে ‘প্রশ্ন’ ও ‘ডিম’ বোঝানো প্রতীক চিহ্ন দেখিয়ে কথা বলতে চেয়েছিল কানজি। যদিও বস্তুটি ছিল একটি বল, কিং বলেন, “এই সাধারণ কথোপকথনই অসাধারণ ছিল।”

কানজি ৩০০-রও বেশি প্রতীক শিখেছিল এবং ইংরেজি কথাও বুঝতে পারত। ভাষা শিক্ষা নিয়ে একাধিক বিতর্ক সত্ত্বেও, সে প্রমাণ করেছিল যে মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীরাও কিছু ভাষাগত সক্ষমতা রাখে।

তবে গবেষণার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কিং বলেন, “এই প্রাণীদের আমরা এক অদ্ভুত ‘মানব-প্রাণী সংকর’ পরিবেশে ফেলেছিলাম। আমাদের কি সত্যিই এই অধিকার ছিল?”

বর্তমানে বিজ্ঞানীরা বনোবোদের প্রাকৃতিক পরিবেশেই ভাষাগত যোগাযোগ নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে কানজির মতো প্রতিভাবান ‘টকিং’ এপের যুগ শেষ হলো তার মৃত্যুতে।