আজকাল ওয়েবডেস্ক: পৃথিবীতে প্রাণীকুলের শরীরে রোগ জ্বালা ছড়িয়ে ব্যতিবস্ত করে থাকে, সেসব ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া কি দুনিয়ার বাইরে, মহাকাশে গেলেও একই ঘটনা ঘটাবে? পৃথিবীতে তারা বেশি দ্রুত রোগ ছড়ায়, নাকি বংশবৃদ্ধি দ্রুত করে মহাকাশে থাকার সময়। সত্যটা জানতে পরীক্ষানিরীক্ষা এবার তা নিয়েই। আর গবেষণার জন্য মহাকাশচারীদের সঙ্গেই পৃথিবী থেকে একেবারে ব্যাকটেরিয়া পাঠানো হল মহাকাশেই। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে খবর তেমনটাই। জানা যাচ্ছে, এই গবেষণার মূল কারণ, এবং উত্তর মিললে কী কী বিষয়ে সম্যক ধারণা লাভ করবেন বিজ্ঞানীরা, কী হবে তাতে? সেসব বিষয়ে। 

জানা গিয়েছে, স্পেসএক্স ১ আগস্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) তাদের যে ক্রু-১১ মিশন চালু করে, যেখানে চারজন মহাকাশচারী গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেই গিয়েছে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াও। মূলত পরীক্ষানিরীক্ষা চলবে তাদের নিয়েই। 

ইজরায়েলের শেবা মেডিকেল সেন্টারের বিজ্ঞানীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মহাকাশ প্রযুক্তি সংস্থা স্পেসট্যাঙ্গোর সঙ্গে সহযোগিতা করে একটি গবেষণা তৈরি করেছেন। জানা গিয়েছে এই গবেষণার মূল লক্ষ্য হল মাইক্রোগ্রাভিটি ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির বৃদ্ধিকে কীভাবে প্রভাবিত করে তা পরীক্ষা করা।

আরও পড়ুন: নিজের বাসভবনের সামনেই কংগ্রেস সাংসদের সঙ্গে ভয়াবহ ঘটনা, গলার হারটুকুও ছিঁড়ে নিল সে! দিল্লিতে সুরক্ষা

এই পরীক্ষায় ই. কোলাই, সালমোনেলা বোঙ্গোরি এবং সালমোনেলা টাইফিমুরিয়াম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যাতে মাইক্রোগ্রাভিটি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি এবং জিনের প্রকাশকে কীভাবে প্রভাবিত করে তা অধ্যয়ন করা যায়। দীর্ঘমেয়াদী মিশনে মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্যকে আরও ভালভাবে সুরক্ষিত করার জন্য বিজ্ঞানীরা মহাকাশ পরিস্থিতি কীভাবে ব্যাকটেরিয়ার আচরণকে প্রভাবিত করে, যার মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ এবং ভাইরাসজনিত রোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তা অধ্যয়ন করবেন।

এই গবেষণা প্রসঙ্গে শেবা মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ গবেষণাগারের প্রধান অধ্যাপক ওহাদ গাল-মোর এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা জানি যে স্থানের পরিস্থিতি ব্যাকটেরিয়ার আচরণকে প্রভাবিত করে, যেখানে, যার মধ্যে রয়েছে তারা কীভাবে বৃদ্ধি পায়, জিন প্রকাশ করে এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বা ভাইরাসের মতো বৈশিষ্ট্য অর্জন করে।‘ 

একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘এই পরীক্ষাটি আমাদের প্রথমবারের মতো, মহাকাশে বিভিন্ন রোগজীবাণু ব্যাকটেরিয়ার জেনেটিক এক্সপ্রেশন প্রোফাইল কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা পদ্ধতিগতভাবে এবং আণবিকভাবে ম্যাপ করার, ধারণা তৈরির জায়গা দেবে।‘

মহাকাশে ব্যাকটেরিয়া ভিন্নভাবে আচরণ করে তা নানা গবেষণায় উঠে এসেছে আগেই।  তথ্য, সেখানে তারা প্রায়শই দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং পরিবর্তিত বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। ব্যাকটেরিয়া মহাকাশচারীদের ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী মিশনের সময়, কারণ তারা সংক্রমণের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। তথ্য, মাইক্রোগ্রাভিটি, বিকিরণ, চাপ এবং মানুষের মাইক্রোবায়োমের পরিবর্তনের সংমিশ্রণের কারণে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধির হার দ্রুত হয়।

 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাকটেরিয়াগুলিকে স্থিতিশীল করা হবে, -80 ডিগ্রি সেলসিয়াসে হিমায়িত করা হবে এবং মাইক্রোগ্রাভিটির অধীনে বৃদ্ধির পরে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। আণবিক এবং ট্রান্সক্রিপশনাল বিশ্লেষণ এবং পৃথিবীতে একই ল্যাব সেটআপে একইসঙ্গে জন্মানো ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে সরাসরি তুলনা করা হবে গবেষণায়।