আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রীয়ের সাড়ে তিন কোটি টাকা হজম করে গায়েব স্বামী। চীনের এক বিশেষভাবে সক্ষম মহিলা সম্প্রতি এমন অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, পলাতক স্বামী নিজেকে শল্য চিকিৎসক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। মহিলা যখন গর্ভবতী, তখন নৃশংস অত্য়াচারও চালিয়েছেন ওই চিকিৎসক। আগাগোড়া সঙ্গী হিসাবে পাসে থেকেও প্রতারণার হাত থেকে শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারেননি মহিলা। 

উত্তর চীনের হেবেই প্রদেশের ৩১ বছর বয়সী এই মহিলা, লি শাংজুয়ান। তাঁর স্বামীর বিরূদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রতারণার এক মর্মান্তিক কাহিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন। তিনি প্রকাশ করেছেন যে কীভাবে তাঁর স্বামী তিন মিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ₹৩.৫ কোটি ভারতীয় টাকা) নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন৷ এ জন্য তাঁকে এখন একা  ছেলেকে লালন-পালনের দায়িত্ব নিতে হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। 

২০১৩ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনার পর কোমর থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হন তিনি। পুনর্বাসনের সময় ডিং নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। ডিং নিজেকে একজন সার্জন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন যে তিনি মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।একবার হাসপাতালে ইন্টার্নশিপও করেছিলেন।  সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগের পর ডিং তাঁর সঙ্গে থাকতে পিড়াপিড়ি করেন। 

এর কিছুদিন পরেই তিনি সরাসরি প্রেম প্রস্তাব দেন। লি'এর বক্তব্য, তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে তাঁর জীবন অবশেষে নতুন দিকে মোড় নিচ্ছে। “যখন তিনি প্রেম প্রস্তাব দেন, তখন  আমার মধ্যেও বিশেষ অনুভূতি তৈরি হয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম আমার জীবন অবশেষে ঘুরে দাঁড়াবে” লি বলেন।

বিয়ের পর, ডিং উন্নত চিকিৎসা সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, তিনি ব্যবসা শুরু করার জন্য তাঁর হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর কথা শুনে নিশ্চিত হন লি এবং তাঁর বাবা-মা।  তাঁকে বিশ্বাস করেন। কিন্তু বিয়ের মাত্র দুই মাসের মধ্যেই, ডিংকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ আটক করে। পরবর্তীতে  লি'ই  টাকা ধার করে তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন।

গর্ভাবস্থার শেষের দিকে, ডিং ব্যবসার অজুহাতে বারবার টাকা দাবি করতে থাকেন। লি দিতে অস্বীকার করেন। তখনই তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়। লি বলেন, ডিং তাকে ত্রিশ লক্ষ ইউয়ানেরও বেশি ঋণ নেওয়ার জন্য চাপ দেন। পাশাপাশি মৌখিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাতে থাকেন ৷  লি আরও জানান, ‘আমার সন্তান আর আমি তাঁর কাছে কেবল দাবার গুটি ছিলাম।’ তাঁদের সন্তান জন্মের পরদিনই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ডিং নিজের অভিভাবকত্ব ছেড়ে দেন।

এরপরেই ডিং হঠাৎ উধাও হয়ে যান এবং সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তাঁদের ছেলে, এখন কেবল লি'এর কাছে বড় হচ্ছে৷ সে তার বাবাকে কখনও দেখেনি । পরবর্তীতে লি আবিষ্কার করেন , ডিংকে যৌন হেনস্তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের ইন্টার্নশিপ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এমনকী, সমস্ত মেডিকেল ডিগ্রি বা লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছিল। ডিং'এর ব্যবসাটিও ভুয়ো । বিয়ে করার সময়েই তিনি ঋণে জর্জরিত ছিলেন৷