আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে থাকার মাঝেই তুরস্ককে বয়কট করা ডাক উঠছে ভারতের মধ্যে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি দুই প্রতিবেশী দেশের দ্বন্দ্বে পাকিস্তানের পক্ষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার পর থেকেই তুরস্ককে বয়কট এবং দেশটির সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করার ডাক উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় #BoycottTurkey স্লোগানের পাশাপাশি দেশজুড়ে তুরস্ক-বিরোধী অবস্থান তৈরি হয়েছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতে অপারেশন সিঁদুর অভিযান চলাকালীন তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়েছিলেন। সেই কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিল পাকিস্তান।
পাকিস্তান তুরস্ককে তাদের পাশে পাওয়ার কথা ঘোষণা করার পরেই, দেশটির পর্যটন বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, তুরস্কের জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ ভারত-পাকিস্তান সংঘাত সম্পর্কে অবগত নয়। এখানকার দৈনন্দিন জীবন বা পর্যটন পরিবেশের উপর এর কোনও প্রভাব নেই। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা এ সব থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছে। একটি বিশেষ বার্তায় ভারতীয় পর্যটকদের সে দেশে স্বাগত জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি সত্ত্বেও তুরস্কের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ স্থগিত বা বাতিল করার কোনও কারণ নেই। আঙ্কারার পর্যটন বিভাগ আরও জানিয়েছে, "সমস্ত পর্যটনস্থল খোলা রয়েছে এবং ভারতীয় অতিথিদের জন্য কোনও বিধিনিষেধ বা নিরাপত্তাজনিত কোনও সমস্যা নেই।"
ভারতীয় নিবেশক নামে একটি এক্স অ্যাকাউন্ট নোটিসটি শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, তুরস্কের পাকিস্তান-পন্থী অবস্থান ইতিমধ্যেই ভারতীয় পর্যটকদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তুর্কি জনগণের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা এই বিষয়টি জানে না যে তুরস্ক ভারতে আক্রমণ করার জন্য সন্ত্রাসী পাকিস্তানকে অস্ত্র দিচ্ছে। এটি আরও বড় সমস্যা এবং যদিও তারা আপনার মতো জানেন না, তবে আপনি অবশ্যই জানেন। সন্ত্রাসবাদ এবং পর্যটন একসঙ্গে চলবে না।
ইতিমধ্যে, পুনের ব্যবসায়ীরা আপেল আমদানি বর্জন করে তুরস্কের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করতে শুরু করেছেন। স্থানীয় বাজার থেকে তুর্কি আপেল উধাও হয়ে গিয়েছে। তুরস্ক আপেলের মরসুমী ব্যবসা ১,০০০ থেকে ১,২০০ কোটি টাকার। তবুও, স্থানীয় পুনের বাজার সম্মিলিতভাবে তুর্কি আমদানি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের কংগ্রেস নেতা কুলদীপ সিং রাঠোর তুরস্ককে আক্রমণ করে জনসাধারণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তুরস্কের আমদানিতে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়ে তিনি। দেশটির বিরুদ্ধে কূটনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলে তিনি জানান, ভারত ২০২৩ সালের ভূমিকম্পের সময় 'অপারেশন দোস্ত'-এর অধীনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
পর্যটন নিয়ে তুরস্কের লাগাতার প্রচারের পরেও প্রভাব পড়েছে পর্যটনে। বিভিন্ন ট্যাভেল এজেন্টরা দাবি করেছেন, তুরস্কে ঘুরতে যাওয়া বাতিল করে দিয়েছেন ৮০ শতাংশ পর্যটক।
