আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিখ্যাত বুলগেরিয়ান ভবিষ্যদ্বক্তা বাবা ভাঙ্গা প্রায় এক চতুর্থাংশ শতাব্দী আগে মারা গেলেও তাঁর রহস্যময় ভবিষ্যদ্বাণীগুলি এখনও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি তিনি আবার ট্রেন্ডে এসেছেন ২০২৫ সালের একটি ভবিষ্যদ্বাণীর কারণে। বলা হচ্ছে, বাবা ভাঙ্গা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ২০২৫ সালের শেষে পৃথিবীতে হানা দেবে এলিয়েনরা। যাকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে একটি বড় সংকট বা বিপর্যয় তৈরি হতে পারে। এই ভবিষ্যদ্বাণীর পেছনে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে একটি রহস্যময় বস্তু, 3I/ATLAS, নিয়ে। জানা গিয়েছে, এটি প্রতি ঘন্টায় ১.৩ লক্ষ মাইল গতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে। এর আকার প্রায় ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার, অর্থাৎ নিউ ইয়র্কের ম্যানহ্যাটন শহরের সমান না তার থেকেও কিছুটা বড়।
চিলির একটি টেলিস্কোপে প্রথম ধরা পড়া এই বস্তুটি সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা, এটি আমাদের সৌরজগতের বাইরের তৃতীয় আবিষ্কৃত বস্তু। এর কক্ষপথের আকৃতি হাইপারবোলিক, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি সৌরজগতের অন্তর্ভুক্ত নয়। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছবে এটি। সেই সময়ে এটি সূর্য থেকে প্রায় ১৩ কোটি মাইল দূরে থাকবে অর্থাৎ মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথের একটু ভিতরে। প্রথমে এটিকে একটি ধূমকেতু বলে মনে করা হলেও, ‘ইনিশিয়েটিভ ফর ইন্টারস্টেলার স্টাডিজ’-এর বিজ্ঞানীরা — অ্যাভি লোয়েব, অ্যাডাম হিবার্ড ও অ্যাডাম ক্রল — দাবি করেছেন, এটি আদৌ প্রাকৃতিক বস্তু নাও হতে পারে। বরং এটি হতে পারে এক টুকরো ভিনগ্রহী গোয়েন্দা প্রযুক্তি — একটি কসমিক “স্পাই প্রোব”।
অ্যাভি লোয়েব তার ব্লগে উল্লেখ করেছেন, এই বস্তুটির গতিপথ এমনভাবে সাজানো যে এটি বৃহস্পতি, মঙ্গল এবং শুক্র গ্রহের খুব কাছ দিয়ে যাবে — ঠিক যেন সেগুলিতে গোপনে নজরদারি সরঞ্জাম বসানোর পরিকল্পনা নিয়েই পাঠানো হয়েছে। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হল, নভেম্বরের শেষ দিকে সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছনোর সময় বস্তুটি পৃথিবী থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। লোয়েব আশঙ্কা করছেন, এটাই হয়তো সেই সময় যখন ভিনগ্রহী প্রযুক্তি চুপিসারে পৃথিবীর দিকে পাঠানো হবে। এই বস্তুটি যদি সত্যিই প্রযুক্তিগত হয়, তবে তা "ডার্ক ফরেস্ট থিয়োরি"-কে সমর্থন করতে পারে — যার মতে, বুদ্ধিমান ভিনগ্রহী সভ্যতাগুলি নিজেদের গোপন রাখে যাতে সম্ভাব্য হুমকি থেকে বাঁচা যায়। এভাবে গোপনে নজরদারি চালানো এবং সম্ভাব্য প্রযুক্তি প্রেরণ এক অভূতপূর্ব নিরাপত্তাজনিত সংকেত হয়ে উঠছে।
যদিও অনেক বিজ্ঞানী এই তত্ত্বকে “অতিরঞ্জিত” বলেই খারিজ করছেন এবং লোয়েব নিজেও বলেছেন যে এটি "সম্ভবত প্রাকৃতিক একটি ধূমকেতু", তবুও বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদি এটি সত্যিই কোনও শত্রুতামূলক ভিনগ্রহী অভিযানের অংশ হয়, তবে মানবজাতির ভবিষ্যৎ এক ভয়াবহ মোড় নিতে পারে। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী, গবেষক ও সাধারণ মানুষ এখন কেবল অপেক্ষা করছে—নভেম্বরে কী ঘটে তা দেখার জন্য। তবে একটাই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে—পৃথিবী কি প্রস্তুত এক সম্ভাব্য ভিনগ্রহী আক্রমণের জন্য? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন সম্ভাবনার জন্য পৃথিবীর প্রতিটি দেশকে এখন থেকেই একযোগে প্রস্তুতি নিতে হবে। মহাকাশ নজরদারির পাশাপাশি চাই কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা স্তরে সমন্বিত উদ্যোগ। নইলে একদিন হয়তো রাতের আকাশে দেখা যাবে এমন কিছু, যা আর কল্পবিজ্ঞান নয়—বরং বাস্তব দুঃস্বপ্ন!
