আজকাল ওয়েবডেস্ক: বয়স যেন সংখ্যা মাত্র। আরও এক প্রেম কাহিনি তা সকলের চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করল। নাতির বয়সী এক তরুণের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন ৮৩ বছরের এক বৃদ্ধা। শুধু কি তাই, প্রেমিক যুগল একসঙ্গে কাটান। কীভাবে তাঁদের প্রেমের শুরু, ভবিষ্যতের পরিকল্পনাই বা কী, যুগলের কথা শুনে নেটিজেনদের মুখেও হাসি ফুটেছে। 

 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের কাহিনিটি আসলে জাপানের। এক বৃদ্ধা ও তাঁর তরুণ প্রেমিকের মধ্যে বয়সের পার্থক্য ৬০ বছরের। ২৩ বছর বয়সি এক তরুণের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন ৮৩ বছরের এক বৃদ্ধা। ছয় মাস আগে সহপাঠীর ঠাকুমা আইকুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কোফুর। 

 

প্রথমবার সহপাঠীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর ঠাকুমার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল কোফুর। প্রথম দেখাতেই আইকুর প্রেমে পড়ে যান কোফু। সম্প্রতি যুগলের এক ইন্টারভিউ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই, সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, আইকুর হাত ধরে ঘুরছেন কোফু। তাঁদের মধ্যে কিসের সম্পর্ক জিজ্ঞেস করতেই জানা যায়, তাঁরা প্রেমিক যুগল। 

 

ওই ভিডিওতেই আইকু জানিয়েছেন, অতীতে তিনি দুইবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। আর পাঁচটি নাতি, নাতনি রয়েছে তাঁর। দ্বিতীয় বিবাহ বিচ্ছেদের পর ছেলের পরিবারের সঙ্গে তিনি থাকেন। অন্যদিকে কোফু বর্তমানে এক কলেজ পড়ুয়া। পাশাপাশি ক্রিয়েটিভ ডিজাইন কোম্পানিতে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছেন। 

 

আরও পড়ুন: ভালবাসার নাটক করে অন্যত্র বিয়ে প্রেমিকের! হেস্তনেস্ত করতে গিয়েছিলেন তরুণী, দুই সপ্তাহ পর ফিরল তাঁর নিথর দেহ

 

আইকু জানিয়েছেন, তিনিও প্রথম দেখাতেই কোফুকে পছন্দ করেছিলেন। কোফুর মতো শান্ত, নম্র স্বভাবের ছেলে তিনি অতীতে কখনও দেখেননি। এমন স্বভাবের এক সুদর্শন তরুণকে দেখেই প্রেমে পড়ে যান। প্রেমে হাবুডুবু খেলেও কেউই কাউকে বলতে সাহস পাচ্ছিলেন না। কারণ, ছয় দশকের বয়সের পার্থক্য। হঠাৎ একদিন কোফুর সহপাঠীই ডিজনিল্যান্ডের পরিকল্পনা করেন। সেখানে কোফুর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনেকেই যেতে পারেননি। শুধুমাত্র কোফু ও আইকু গিয়েছিলেন। 

 

ডিজনিল্যান্ডে সন্ধ্যা নামার সময়েই আইকুকে প্রেমের প্রস্তাব দেন কোফু। কোফু তাঁর প্রেমে পড়েছেন শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন আইকু। ক্রমেই তাঁদের দেখা সাক্ষাৎ বাড়তে থাকে। ডেটিংয়ের সময় একে অপরের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কার বাড়িতে থাকবেন তা শুরুতে স্থির করতে পারছিলেন না। 

 

কিছুদিনের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি দুই পরিবারেও জানাজানি হয়ে যায়। কিন্তু কেউই অশান্তি করেননি। বরং ৬০ বছরের বয়সের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দুজনের সম্পর্ক মেনে নেন। বর্তমানে একসঙ্গেই থাকেন তাঁরা। 

 

ভবিষ্যতে বিয়ের পরিকল্পনা রয়েছে কী? আইকু ও কোফু জানিয়েছেন, তাঁরা চুটিয়ে প্রেম করলেও, বিয়ের বিষয়ে কোনও তাড়াহুড়ো নেই। বিয়ের ভাবনাচিন্তাও করছেন না। কিন্তু কোফু জানিয়েছেন, ঘুম ভাঙার পর আইকুর মুখ দেখতেই তিনি সবচেয়ে পছন্দ করেন। অন্যদিকে আইকু জানিয়েছেন, কোফু যখন কাজে বেরিয়ে যান, তখন নিঃসঙ্গতা অনুভব করেন। কিন্তু কোফুর জন্য রান্না করে মনে আনন্দ পান। সারাদিন কোফুর জন্য অপেক্ষা করেন। 

 

অসমবয়সী প্রেমের কাহিনি শুনে অনেকেই অভিভূত হয়ে গেছেন। পাশাপাশি অনেকেই বয়সের পার্থক্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকের মতে, সম্পর্ক কতদিন টিকবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, সম্পর্কে মধুর স্মৃতি বেশি রয়েছে কিনা। একসঙ্গে ভাল থাকলেই, কারও অসুবিধা নেই।