আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বামীর প্রথম স্ত্রীর সন্তান পথের কাঁটা। ফাঁকা বাড়িতে চার বছরের শিশুকে নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সৎ মায়ের। স্বামীর অনুপস্থিতিতে শিশুকে মারতে মারতেই খুন করলেন তিনি। জেরায় স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সৎ মা। অবশেষে পুলিশের জালে তিনি। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর প্রথম পক্ষের ছেলেকে নির্মমভাবে খুনের অভিযোগ উঠেছে সৎ মায়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগটি দায়ের করেছেন মৃত শিশুর বাবা। চার বছর বয়সি শিশুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে বেধড়ক মারধর করেন সৎ মা। গুরুতর আহত অবস্থায় শেষমেশ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ওই শিশু। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ২৭ অক্টোবর। ঘটনাটি ঘটেছে দইয়ালা ব্লকে। রবিবার মৃত শিশুর বাবা রাহুল কুমার পুলিশকে জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই ছেলেকে চরম নির্যাতন করতেন দ্বিতীয় স্ত্রী। ছোটখাটো কারণেই তাকে মারধর করতেন। যা ঘিরে অশান্তিও তুমুল হত। তাঁর ধারণা, সৎ মায়ের অত্যাচারেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

রাহুল বুল্লাওয়ালা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি জানান, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরেই দ্বিতীয়বার প্রিয়া নামের যুবতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম স্ত্রীর সন্তানকে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি তিনি। ঘটনার দিন তিনি কর্মসূত্রে বাইরে ছিলেন। সেই সময়েই ছেলেকে নির্যাতন করেন সৎ মা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত হয় শিশুর। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। তাঁকে গ্রেপ্তার করে তারা।

দীর্ঘ জেরায় প্রিয়া স্বীকার করেছেন, রাগের মাথায় শিশুকে তিনি ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। বেধড়ক মারধর করেন। তাতেই গুরুতর আহত হয় শিশুটি। হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরেই এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। ছাদ থেকে হঠাৎ নীচে পড়ে গিয়েছিল নাবালিকা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধারের পর জানা যায়, ছাদে একা একা খেলছিল সে‌। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চারতলা থেকে নীচে পড়ে যায়। প্রথমে সকলেই জানতেন, দুর্ঘটনার জেরে নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার নাবালিকার মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর জানা গেল, দুর্ঘটনার জেরে নয়, তাকে খুন করা হয়েছিল। তাও আবার পরিকল্পনামাফিক। নাবালিকার সৎ মা চারতলার ছাদ থেকে তাকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে দিয়েছিল। খুনের দুই সপ্তাহ পর এক প্রতিবেশী সিসিটিভি ফুটেজ জমা দিতেই আসল ঘটনা প্রকাশ্যে এল। হাড়হিম কাণ্ড দেখেই শিউরে উঠেছে পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বিদার জেলায়। যা প্রথমে সকলেই ভেবেছিলেন নিছক দুর্ঘটনা। কয়েক দিন পর জানা গেল , সেটিই ছিল পরিকল্পনামাফিক হত্যাকাণ্ড। গত ২৭ আগস্ট আর্দশ কলোনিতে সাত বছর বয়সি এক নাবালিকা আবাসনের চার তলা থেকে পড়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, নাবালিকা খেলতে খেলতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। কিন্তু তদন্তে নেমে শিউরে ওঠে পুলিশ। জানা যায়, নাবালিকাকে আদতে খুন করা হয়েছিল। 

সেদিন সন্ধ্যায় আর্দশ কলোনির বাসিন্দারা বিকট শব্দ শুনে আবাসনের নীচে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, সাত বছরের ওই নাবালিকা রক্তাক্ত অবস্থায় আবাসনের নীচেই পড়ে আছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেও শেষরক্ষা হয়নি। নাবালিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। নাবালিকার বাবা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, আবাসনের ছাদে খেলাধুলা করছিল নাবালিকা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। পুলিশ সেই সময় দুর্ঘটনাবশত মৃত্যুর মামলা রুজু করে। 

দুই সপ্তাহ পর ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। গত ১২ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেশী একটি সিসিটিভি ফুটেজ জমা দেন থানায়। ওই আবাসনের পাশের বিল্ডিংয়েই ছিলেন ওই প্রতিবেশী ব্যক্তি। তিনিও ওই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন। দেখা গেছে, সেদিন ছাদে নাবালিকার সঙ্গে তার সৎ মা রাধাও ছিলেন। একটি চেয়ারের উপর বাস্কেট রেখেছিলেন। তাতে ওই নাবালিকাকে বসিয়ে দেন। কয়েক সেকেন্ড পর সেটি ধাক্কা দিতেই নাবালিকা ছাদ থেকে নীচে পড়ে যায়। 

সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও দেখে শিউরে ওঠে নাবালিকার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারাও। এমনকী পুলিশও চমকে যায়। নাবালিকার মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর জানা যায়, দুর্ঘটনার জেরে নয়, আদতে তাকে খুন করা হয়েছে। এরপরই নাবালিকার ঠাকুমা বিদার গান্ধী গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই অভিযুক্ত রাধাকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ওই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে তারা। পাশাপাশি অভিযুক্ত রাধাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নাবালিকার মা ছয় বছর আগে মারা যান। নাবালিকার বাবা সিদ্ধার্থ ২০২৩ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রাধা ও সিদ্ধার্থের যমজ সন্তান রয়েছে। পুলিশের অনুমান, স্বামীর প্রথম স্ত্রীর সন্তানকে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি রাধা। হিংসা, সম্পত্তির ভাগাভাগির জেরেই খুনের ঘটনাটি হয়তো ঘটেছে।