আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরাখণ্ডে টানা ভারী বর্ষণ ও একের পর ভূমিধসের কারণে সম্প্রতি পাহাড়ি রাস্তায় বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে পরীক্ষা পড়েছিল চার ছাত্রের। একদিকে রাস্তা বন্ধ, অন্যদিকে পরীক্ষা না দিলেও নয়। পরীক্ষায় বসার জন্য চার ছাত্রের অভিনব পদক্ষেপ এখন ভাইরাল। জানা গিয়েছে, রাজস্থানের বালোটরার চার বি.এড ছাত্র হেলিকপ্টার ভাড়া করে পৌঁছন পরীক্ষাকেন্দ্রে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, চার ছাত্র—ওমারাম জাট, মাঙ্গারাম জাট, প্রকাশ গোদারা ও নরপত কুমার একটি প্রাইভেট চপারে বসে রয়েছেন। তাঁদের শেষ সেমিস্টারের পরীক্ষা ছিল ৩ সেপ্টেম্বর, উত্তরাখণ্ড ওপেন ইউনিভার্সিটিতে। পরীক্ষা মিস করলে এক বছরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। রাস্তাও ছিল বন্ধ।
4 students from Balotra, Rajasthan travelled from Haldwani to Munsiyari in Uttarakhand by helicopter to take exam, and after completing, returned to Haldwani the same way.#Rajasthan #rajasthanstudents #Uttarakhand #landslide #uttarakhandflashfloods #viralvideo #HelicopterCrash pic.twitter.com/EtP84pJy4W
— Manchh (@Manchh_Official)Tweet by @Manchh_Official
সে কারণে চারজন মিলে সিদ্ধান্ত নেন হেলিকপ্টার ভাড়া করে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার। ১ সেপ্টেম্বর তাঁরা হালদ্বানিতে পৌঁছেছিলেন, সেখান থেকে পিথোরাগড় জেলার মুনসিয়ারিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু ভূমিধসের খবর পেয়ে সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তখনই তাঁরা যোগাযোগ করেন হেলিকপ্টার পরিষেবার সঙ্গে। জানা গিয়েছে, চপারে প্রায় ৪০ মিনিটের যাত্রাপথে প্রতি ছাত্রকে দিতে হয় ১০ হাজার ৪০০ টাকা করে। মোট ৪০ হাজার টাকার বেশি খরচ হলেও ছাত্ররা সময়মতো মুনসিয়ারি কলেজে পৌঁছে পরীক্ষায় অংশ নেন। পরদিন ফের একইভাবে হেলিকপ্টারে হালদ্বানিতে ফিরে আসেন।
মাঙ্গারাম জাট নামে ওই ছাত্র বলেন, ‘আমাদের শেষ পরীক্ষা ছিল ৩ সেপ্টেম্বর। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে হেলিকপ্টার নিতে হয়। ৪০ মিনিটেই প্রায় ৩০০ কিলোমিটার অতিক্রম করি। খরচ বেশি হলেও আমাদের বছরটা বাঁচল।’ পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলেও ছাত্ররা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এখনও উত্তরাখণ্ডের বহু জায়গায় ভূমিধসের কারণে সাধারণ মানুষ ও পর্যটকেরা সমস্যায় পড়ছেন। উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও ভূমিধসে সম্প্রতি একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের একাধিক জেলায় মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে প্রবল ধস ও ধ্বংসযজ্ঞ নেমে এসেছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, চামোলি, রুদ্রপ্রয়াগ, টেহরি ও বাগেশ্বর জেলাগুলোর পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ। ভূমিধস ও কাদাজলের স্রোতে প্রায় ৪০টি পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রুদ্রপ্রয়াগ জেলার বাসুকেদার তেহসিলের বারের্থ ডুংগর টোক এবং চামোলি জেলার দেওয়াল এলাকা এই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। এই বিষয়ে এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী ধামি নিজেই পোস্ট করে জানান। তিনি জানান স্থানীয় প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি, তিনি স্বয়ং প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। দুর্যোগ সচিব ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের কার্যকর উদ্ধার ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। কয়েকদিন আগে রুদ্রপ্রয়াগের একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, পুরো এলাকা কাদা ও ধ্বংসাবশেষে ঢেকে গিয়েছে। স্থানীয় স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বহু পরিবার, তবে অনেকেই এখনও ভয়াবহ বিপদের অবস্থায় স্রোতের অপর পারে আটকে রয়েছেন।
