সমীর ধর, আগরতলা: বাংলাদেশের "বিজয় দিবস" উদযাপিত হল শনিবার আগরতলায়। সেদেশের জনগণের প্রায় ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রাম এবং তার জেরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ৯৩ হজার পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করেছিল ভারতীয় সেনার কাছে। ঐতিহাসিক সেই স্বাধীনতা যুদ্ধে আগরতলা তথা ত্রিপুরা এবং ভারতের গৌরবময় ভূমিকার স্মৃতি আবার উঠে এল শনিবার বিজয় দিবসের নানান অনুষ্ঠানে।
এদিন আগরতলার লিচুবাগানে অ্যালবার্ট এক্কা মেমোরিয়াল পার্কে ওই যুদ্ধে শহিদ হওয়া ভারতীয় সেনা জওয়ানদের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু। ছিলেন মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়-সহ সেনাবাহিনীর পদস্থ আধিকারিক ও জওয়ানরা। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের যে গঙ্গাসাগর হয়ে আগরতলা-আখাউড়া রেলপথ বসেছে, সেখানকার যুদ্ধক্ষেত্রেই ১৯৭১-এর ৩ ডিসেম্বর নিহত হয়েছিলেন ভারতীয় সেনার বীর হাবিলদার অ্যালবার্ট এক্কা। মরণোত্তর পরমবীরচক্র উপাধিতে ভূষিত এই শহিদের নামাঙ্কিত শান্ত সুদৃশ্য পার্কে এদিনের অনুষ্ঠানের পর রাজ্যপাল পতাকা নেড়ে বাইক ও বাইসাইকেলের মৈত্রী র‍্যালির সূচনা করেন।
এদিন আগরতলার বাংলাদেশ সহকারি হাই কমিশনারের অফিস প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সহকারি হাই কমিশনার আরিফ মহম্মদ। সে দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিত শুভেচ্ছাবার্তা পাঠ এবং প্রার্থনার পর প্রদর্শিত হ্য় মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র।  
জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর হয় আলোচনাচক্র। প্রধান অতিথি ছিলেন ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা প্রাপ্ত আওয়াল মিয়াঁ, শাহাজান ভুইয়া, হিমায়েত উদ্দীন কালাম, ত্রিপুরা বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ রেবতী মোহন দাস, ত্রিপুরা থেকে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা প্রাপ্ত অধ্যাপক মিহির দেব, সাংবাদিক স্বপন ভট্টাচার্য প্রমূখ। শেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।