আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ ঝাড়খণ্ডে লাইনচ্যুত মালগাড়ি। জানা গেছে, শনিবার ভোর চারটে নাগাদ ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা–খারসওয়ান জেলায় এই ঘটনাটি ঘটে। 
ঝাড়খণ্ডের চাণ্ডিল স্টেশনের কাছে দু’টি মালগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় শনিবার ভোরে। দক্ষিণ–পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি মালগাড়ি মিলিয়ে প্রায় ২০টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। এই ঘটনার জেরে বাতিল হয়েছে দক্ষিণ–পূর্ব রেলের চাণ্ডিল–টাটানগর শাখার বহু ট্রেন। তবে কারও হতাহতের খবর নেই। 


রেল সূত্রে জানা গেছে, লোহা বোঝাই একটি মালগাড়ি টাটানগর থেকে পুরুলিয়া যাচ্ছিল। শনিবার ভোরে আদ্রা ডিভিশনের চাণ্ডিল স্টেশন পার হতেই সেটি লাইনচ্যুত হয়ে পাশের লাইনে পড়ে যায়। সে সময় পাশের লাইনে উল্টো দিক থেকে আসছিল আরও একটি মালগাড়ি। পুরুলিয়াগামী মালগাড়ির সঙ্গে সেই মালগাড়ি মুখোমুখি ধাক্কা খায়। তার পরে দ্বিতীয় মালগাড়িরও কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়।

 

আরও পড়ুন:‌ ১২ বছর হাতে নেই রাখি, ভাই-বোনের এই গল্প শুনলে চোখে জল আসবে


খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যান রেলের আধিকারিকরা। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির জন্যই মালগাড়িটি উলটে গিয়েছে। এই ঘটনার জেরে ২০টি যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। রুট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক ট্রেনের। প্রভাব পড়েছে হাওড়া শাখার ট্রেনেও। আপাতত লাইন থেকে মালগাড়ির কামরা সরানোর কাজ চলছে। বেশ কয়েকটি ট্রেন ঘুরপথে চলছে। কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে পাটনা–টাটানগর বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, টাটানগর–কাটিহার এক্সপ্রেস, কাটিহার–টাটানগর এক্সপ্রেস। 


প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে একাধিক রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশ। তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ২০২৩ সালের জুনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। ওড়িশার বালেশ্বরে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০। আহতের সংখ্যা ছিল প্রায় হাজার। 


দুর্ঘটনার দিন শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি। 

 

আরও পড়ুন:‌ ‘অপারেশন আখাল’-এর নবম দিনে বিরাট দুঃসংবাদ, জঙ্গিদের গুলিতে নিহত দুই জওয়ান, আপডেট দিল চিনার কর্পস...


জানা যায় বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার–চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস, ডাউন বেঙ্গালুরু–হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। লাইনচ্যুত হয়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি বগি। বেঙ্গালুরু–হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের দুটি বগিও লাইন থেকে ছিটকে যায়। 

এই ঘটনার ঠিক এক বছর পর সেই জুনেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। শিলিগুড়ির কাছে একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান অন্তত ১০ জন। অন্তত ৪০ জন হন আহত। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছিল সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ত্রুটির জন্যই এই দুর্ঘটনা। এছাড়াও এর আগে পরে বহু ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে দেশে। তবুও রেলের হুঁশ ফেরেনি। যার প্রমাণ মিলেছে বারবার। রাজধানী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় পড়ার ঘটনাও কারও অজানা নয়। শনিবারও ঝাড়খণ্ডে মুখোমুখি সংঘর্ষ হল দুই মালগাড়ির। হতাহতের সংখ্যা না থাকলেও সেই রেলের নিরাপত্তা নিয়ে উঠল প্রশ্ন।