নিতাই দে, আগরতলা: এ.আই ও ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে হবে। প্রযুক্তিকে জানার জন্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে। মানুষের কল্যাণের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করা প্রয়োজন। মঙ্গলবার আগরতলার লিচুবাগানস্থিত সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ১১টি সরকারি কলেজে (দ্বিতীয় পর্যায়) ওয়াই-ফাই সুবিধার উদ্বোধন এবং ২০২৪ - ২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগযোগ যোজনার সূচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা। 

 

তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তর এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, 'ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা থাকলে কাজেরও অনেক সুবিধা হয়। আগেই রাজ্যের ১৯টি সরকারি কলেজে ওয়াই-ফাই পরিষেবা চালু হয়েছে। আজ ১১টি কলেজে এই সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হয়ে যাবে। এতে উপকৃত হবেন ছাত্রছাত্রীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রযুক্তির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন ভারতবর্ষের যুব সম্প্রদায় (১৮ থেকে ৩৫ বছর) মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ থেকে ৬৫%। যেটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয় এবং পৃথিবীর কোনও দেশে এই বিপুল সংখ্যায় যুব শক্তি নেই। ২০৪৭ এর মধ্যে বিকশিত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে এই যুব শক্তি একটা বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। দেশের অর্থনীতি এখন ১১তম স্থান থেকে চতুর্থ স্থানে চলে এসেছে। ২০৪৭-এ ৩০ প্লাস ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আর বিকশিত ত্রিপুরা ২০৪৭ এর জন্য ইতিমধ্যে রূপরেখা ঘোষণা করেছে ত্রিপুরা।' 

আরও পড়ুন: কোথাও ধস, কোথাও গাছ উপড়ে প্রাণহানি, ১১০ কিমি বেগে ঝড়ের দাপটে তছনছ অন্ধ্রপ্রদেশ, আজও বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'ত্রিপুরা এখন সব বিষয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে দেশের তৃতীয় পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য হিসেবে ঘোষিত হয়েছে ত্রিপুরা। ইউনেস্কোর গাইডলাইন মেনে এটা করতে হয়েছে। গোয়া এবং মিজোরামের পরে এই স্থান অর্জন করেছে ত্রিপুরা। বর্তমানে সবক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্ভরতা রয়েছে। অপারেশন সিঁদুরে প্রযুক্তির গুরুত্ব আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগযোগ যোজনায় কলেজের ফাইনাল ইয়ারে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল কেনার জন্য ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এখন কলেজগুলিতে ওয়াই-ফাই চালু হওয়ায় ইন্টারনেটের জন্য আর নিজেদের পয়সা খরচ করতে হবে না তাঁদের।'

 

আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'রাজ্য সরকার স্টার্ট আপ পলিসি করেছে। বাইরে থেকেও বিনিয়োগকারীরা আসছেন রাজ্যে। ডাটা সেন্টার গড়ে তোলার জন্য এয়ারটেলকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল সায়েন্সেও প্রযুক্তি ছাড়া হয় না। এ.আই (আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স) ও ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে মেডিক্যাল সার্ভিস ও কৃষি ক্ষেত্রে দারুণ কাজ হচ্ছে এখন। আজকাল ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ সবই কিন্তু প্রযুক্তি নির্ভর। প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষকে সেরা পরিষেবা প্রদান করতে হবে। তবে প্রযুক্তিকে ভালর জন্য ব্যবহার করা প্রয়োজন।' রাজ্যে আরও মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের জন্যও গুরুত্ব তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। 

 

 মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ডিজিটাল শিক্ষার প্রসারে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের অধীনে এই মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগযোগ যোজনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০২৫ - ২৬ অর্থবর্ষে সরকারি কলেজের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে স্মার্ট ফোন কেনার জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এতে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। আর প্রযুক্তিকে জানার জন্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে ছেলেমেয়েদের। এতে নতুন কিছু জানতে সহায়ক হবে। 

 

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায়, উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী কিশোর বর্মন, তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের অধিকর্তা, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা অনিমেষ দেববর্মা, আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিত ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।