আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর জেলায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় তিন কলেজ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, তাঁরা কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আগে পোশাক বদলাচ্ছিলেন এমন মহিলা ছাত্রীদের গোপনে ভিডিও করছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার, ভানপুরা গভর্নমেন্ট কলেজে আয়োজিত এক যুব উৎসব চলাকালীন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় চারজন যুবক মেয়েদের চেঞ্জিং রুমের জানালা দিয়ে উঁকি দিচ্ছেন এবং মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও তুলছেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রীতি পঞ্চোলি বিষয়টি লক্ষ্য করে সঙ্গে সঙ্গেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

মন্দসৌরের পুলিশ সুপার বিনোদ মীনা জানান, “সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে চারজন ছেলে জানালার বাইরে দাঁড়িয়ে উঁকি মারছে। এর ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং একজন এখনও পলাতক। তাদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।”

গ্রেপ্তার হওয়া তিন ছাত্রের নাম উমেশ জোশী, অজয় গৌড় ও হিমাংশু বৈরাগী। তিনজনই স্থানীয়ভাবে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP)-এর সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে। উমেশ জোশী সংগঠনের শহর সম্পাদক পদে ছিলেন। ঘটনার পর এবিভিপি তাকে অবিলম্বে ওই পদ থেকে অপসারণ করেছে।

আরও পড়ুন:  তাজমহল নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের সমস্যা কোথায় জানেন কি? কারণ জানলে চমকে উঠবেন

কলেজের অধ্যক্ষ প্রীতি পঞ্চোলি বলেন, “উৎসবের সময় সন্দেহ হয় কেউ যেন মেয়েদের ছবি তুলছে। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হই এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়। আমরা চাই, পুলিশ এই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিক।”

ভানপুরা থানার ইন্সপেক্টর রমেশচন্দ্র দাঙ্গি জানান, অভিযুক্তরা অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, “এখনও পর্যন্ত মেয়েদের পোশাক বদলানোর ভিডিও উদ্ধার হয়নি, তবে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রযোজ্য আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

পুলিশ জানিয়েছে, তিনজন অভিযুক্তই বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির নতুন অপরাধ সংহিতা (BNS) অনুযায়ী ধারা ৭৭ এবং ৩(৫)-এর আওতায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা যথাক্রমে গোপনে উঁকি মারা (voyeurism) ও একাধিক ব্যক্তির যৌথ অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত।

অভিযুক্ত তিনজনকেই আদালত বিচারিক হেফাজতে পাঠিয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে, যাতে দেখা যায় আরও কোনও অনুরূপ ভিডিও সেই ফোনে সংরক্ষিত ছিল কি না।

মন্দসৌর জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কলেজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করা হবে এবং চেঞ্জিং রুম ও মেয়েদের বিশ্রামাগারে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।