আজকাল ওয়েবডেস্ক: জাজপুর জেলার ৩২ বছর বয়সি এক দৃষ্টিহীন শিক্ষক সম্প্রতি সম্মানীয় ওড়িশা সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন। তৃতীয়বার প্রচেষ্টায় ৩০০ র‍্যাঙ্ক করেছেন তিনি। কোড়েই ব্লকের বড় বিরুহান গ্রামের বাসিন্দা মহেশ পণ্ডা। ২০১৬ সাল থেকে কটক জেলার আঠাগড়ের আদর্শ বিদ্যালয়ে ওড়িয়া ভাষার শিক্ষক হিসাবে কর্মরত তিনি।

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন মহেশ। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট তিনি। জানা গিয়েছে বাবা চাষবাস করে সাত জনের সংসার চালাতেন। এক ছাপোষা পরিবারেই তাঁর বেড়ে ওঠা। তাঁর বাবা লক্ষ্মীনারায়ণ বলেন, "অনেক ভালো চিকিৎসা করিয়ে এবং বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও ডাক্তাররা ওর দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে পারেননি। শেষে আমরা সবটা ভাগ্যের উপরেই ছেড়ে দিয়েছিলাম।"

 

খবর অনুযায়ী, মহেশ ২০০৯ সালে নুয়াপাড়ার ব্লাইন্ড স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর র‍্যাভেনশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন তিনি। কোরাপুট কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এড এবং উৎকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওড়িয়া ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য! ভুল পথে দৌড়েও প্রথম ৯ বছরের বালক, মায়ের দুশ্চিন্তা মুহূর্তে বদলে গেল বিস্ময়ে

 

স্কুলের পর উচ্চশিক্ষার পথে একাধিকবার আর্থিক বাধা এসেছিল মহেশের। কিন্তু স্থানীয় দুই হিতৈষীর সাহায্যে সেই বাধা দূর হয়। কটকের 'যুগ নির্মাণ বিদ্যা পরিষদ' এবং 'গায়ত্রী মিশন' তাঁর উচ্চশিক্ষার খরচ বহন করে।

আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে র‍্যাপিডো সফর যেন চলন্ত সিরিয়াল! চালকের ফোনে তোলপাড় জীবন, সফরের মাঝে সিনেমার সাক্ষী যাত্রী

শিক্ষকতার চাকরির সঙ্গে সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি কী ভাবে সামলালেন? এ প্রসঙ্গে মহেশ বলেন, "দিনের বেলা ছাত্রদের পড়াতাম, আর রাতটুকু ছিল নিজের পড়াশোনার জন্য। প্রযুক্তির দৌলতে এখন দৃষ্টিহীনদের জন্য পড়াশোনা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।" এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মহেশ তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের সমর্থনের জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন।

তিনি বলেন, "আমি আমার জীবন রাজ্যের কল্যাণে উৎসর্গ করব।"

 

উল্লেখ্য, শুক্রবার ২০২৩ সালের ওড়িশা সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে মোট ৩৯৮ জন প্রার্থী যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে খবর মিলেছে৷